নামাযের ফযীলত:


জুমার খুতবা:
========
১ম জুমা, জুমাদা আল উলা, ১৪৩৯ হি: জানুয়ারী-2018

নামাযের ফযীলত:
****************
আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর এবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছেন। শুধু মানুষ নয়; মানুষ ও জ্বীন-উভয় জাতিকে আল্লাহ তাঁর এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ “আমি মানব ও জ্বীন জাতিকে একমাত্র আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।” (যারিয়াত-৫৬) ফলে তিনি মানুষের জন্য কিছু দৈহিক, আত্মিক ও আর্থিক এবাদতের বিধান প্রনয়ন করেছেন। দৈহিক এবাদতের মাঝে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মহান এবাদত হল নামায। নামায এমন একটি এবাদত যাকে আল্লাহ তাঁর মাঝে এবং তাঁর বান্দার মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম সাব্যস্ত করেছেন। সহীহ হাদীসে এর প্রমাণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى يُنَاجِي رَبَّهُ “নিশ্চয়ই তোমাদের কেউ যখন নামায আদায় করে তখন সে তার প্রতিপালকের সাথে (মুনাজাত করে) নির্জনে কথা বলে।” (صحيح البخاري গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ أبواب استقبال القبلة গ্ধ باب حك البزاق باليد من المسجد, رقم الحديث: ৩৯৭ )

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ الله عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: “أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ” “বান্দা সিজদারত অবস্থায় তার রবের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়।” (মুসলিম)
. أخرجه مسلم (১/৩৫০ ، رقم ৪৮২) ، وأبو داود (১/২৩১ ، رقم ৮৭৫) ، والنسائي (২/২২৬ ، رقم ১১৩৭) . وأخرجه أيضاً : أحمد (২/৪২১ ، رقم ৯৪৪২) ، وابن حبان (৫/২৫৪ ، رقم ১৯২৮) ، والبيهقي (২/১১০ ، رقم ২৫১৭). قال الإمام النووي في “شرح صحيح مسلم”: مَعْنَاهُ أَقْرَب مَا يَكُون مِنْ رَحْمَةِ رَبّه وَفَضْلِه. وَفِيهِ الْحَثُّ عَلَى الدُّعَاءِ فِي السُّجُود. وَفِيهِ دَلِيلٌ لِمَنْ يَقُولُ إِنَّ السُّجُود أَفْضَل مِنَ الْقِيَامِ وَسَائِرِ أَرْكَانِ الصَّلَاة.
নামায একমাত্র এবাদত যা আল্লাহ তাআলা সাত আসমানের উপরেই ফরয করাকে শ্রেয় মনে করেছেন। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মেরাজে গমন করেন তখন আল্লাহ তাআলা সরাসরি-কোন প্রকার মাধ্যম ছাড়াই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নামায উপহার দিয়েছেন। এতে নামাযের মহত্ত্ব, মর্যাদা ও গুরুত্বের প্রতিফলন ঘটে।

ইসলামে নামাযের গুরুত্ব অপরিসীম:
————————————–
নামায ইসলামের দ্বিতীয় রুকন, যা সুপ্রতিষ্ঠিত করা ব্যতীত কামেল মুসলমান হওয়া যায় না। নামাযে অবহেলা, অলসতা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এরশাদ: عن جَابِر رضى الله عنه يَقُولُ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ إِنَّ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكَ الصَّلَاةِ “মুমিন ও কুফর-শিরকের মধ্যে ব্যবধান হল নামায পরিত্যাগ করা”। (মুসলিম)
الحديث أخرجه مسلم حديث (৮২)، وانفرد به عن البخاري، وأخرجه الترمذي في “كتاب الإيمان” “باب ما جاء في ترك الصلاة” بلفظ: (بين الكفر والإيمان ترك الصلاة)، وأخرجه النسائي في “كتاب الصلاة” “باب الحكم في تارك الصلاة” حديث (৪৬৩).

তা ছাড়া নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে, ‘কোন আমল উত্তম’ জিজ্ঞাসা করা হলে তার প্রত্যুত্তরে তিনি এরশাদ করেন,
عن عبد الله بن مسعود رضي الله عنه قال: سَأَلْتُ النَّبِيَّ- صلى الله عليه وسلم- أَيُّ العَمَلِ أَحَبُّ إلَى اللهِ؟ قَالَ: ্রالصَّلاةُ عَلَى وَقْتِهَاগ্ধ
“সময় মত নামায আদায় করা”। (বুখারী ও মুসলিম)। “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের সময় তাঁর উম্মাতের জন্য সর্বশেষ অসিয়ত এবং অঙ্গীকার গ্রহণ ছিল, তারা যেন নামায ও তাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে।” (হাদীসটি ইমাম আহমাদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ বর্ণনা করেছেন)عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ : (( أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ فِي مَرَضِهِ الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ : الصَّلاةَ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ، فَمَا زَالَ يَقُولُهَا حَتَّى مَا يَفِيضُ بِهَا لِسَانُهُ(رواه ابن ماجه في الجنائز باب ما جاء في مرض رسول الله صلى الله عليه وسلم (১৬১৪) وصححه الألباني في صحيح ابن ماجه ، وفي الزوائد : إسناده صحيح على شرط الشيخين) .

رَوى الطبرانِيُّ عن النبِيِّ صلى الله عليه وسلم أنهُ قال:”أَوَّل ما يُحَاسَبُ بهِ العبدُ يومَ القيامةِ الصلاة، فإنْ صَلحَتْ صَلحَ لَهُ سَائِرُ عَمَلِهِ، وإِنْ فسَدَتْ فَسَدَ سَائِرُ عَمَلِهِ”
“কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাযের হিসাব হবে। যদি নামায ঠিক হয় তবে তার সকল আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি নামায বিনষ্ট হয় তবে তার সকল আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে।” (তিরমিযি:২৭৮)
روى أبو داود (৮৬৪) ، والترمذي (৪১৩) ، والنسائي (৪৬৫) عن أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : ( إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عَمَلِهِ صَلَاتُهُ فَإِنْ صَلُحَتْ فَقَدْ أَفْلَحَ وَأَنْجَحَ وَإِنْ فَسَدَتْ فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ ، فَإِنْ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيضَتِهِ شَيْءٌ قَالَ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ : انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِي مِنْ تَطَوُّعٍ فَيُكَمَّلَ بِهَا مَا انْتَقَصَ مِنْ الْفَرِيضَةِ ؟ ثُمَّ يَكُونُ سَائِرُ عَمَلِهِ عَلَى ذَلِكَ )

ঈমানের পরই নামাযের স্থান। একজন লোকের ঈমানের প্রমাণ ও বাস্তব রূপ প্রকাশ পায় তার নামায আদায়ের মাধ্যমে। নামাযের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহর সাথে দেয়া প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটায়। ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথ কংটকমুক্ত হয়। নামাযের মাধ্যমে একজন মু’মিন সরাসরি তার প্রভুর সান্নিধ্যে পৌঁছে এবং আল্লাহর নিকট নিজ ফরিয়াদ-আবেদন এবং বিপদাপদ ও দু:শ্চিন্তার কারণগুলো তুলে ধরেন। এ কারণেই যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন বিষয়ে চিন্তিত হতেন তাড়াতাড়ি নামাযে মগ্ন হতেন। আল্লাহ এরশাদ করেন: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ“হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা আল বাকারা , আয়াত: ১৫৩)

আল্লাহ তাআলা আরও এরশাদ করেন:وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ * الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُمْ مُلاقُو رَبِّهِمْ وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
“এবং তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। অবশ্যই তা কঠিন কিন্তু বিনীতগণের জন্যে নয়। যারা এ নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে যে, নিশ্চয় তারা তাদের প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবে এবং তারা তারই দিকে প্রতিগমন করবে। (সুরা বাকারাহ: ৪৫,৪৬)

নামায ব্যক্তি, পরিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মমতাবোধ ফিরিয়ে আনে, গড়ে তোলে সামাজিক ঐক্য। একাগ্র মনে নামায আদায়কারী নিজের ও সমাজের কল্যান ব্যতিত কোনো খারাপ কাজ করতে পারে না। এ ছাড়া নামায অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ তাআ’লা এরশাদ করেন: وَأَقِمِ الصَّلَاةَ ۖ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَىٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ ۗ “আর নামায সুপ্রতিষ্ঠিত কর। নিশ্চয় নামায অশালীন এবং অন্যায় কাজ থেকে বারণ করে”। (সূরা আল-আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)


খাদ্য ও পানীয় দেহের বৃদ্ধি ঘটায়, আর রূহের বৃদ্ধি ঘটে যখন সে তার স্রষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে নামায, কুরআন তিলাওয়াত, রোযা, হজ, যিকির, দু‘আ-দূরুদ ও ইবাদতের মাধ্যমে। আর নামায হলো আত্মার পরিচর্যার সর্বোত্তম মাধ্যম, এ কারণে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের ওপর দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। যাতে রূহের সঙ্গে তার রবের যোগাযোগ অবিচ্ছিন্ন থাকে এবং তা দুর্বল না হয়ে পড়ে। সাথে সাথে যাতে দেহ তার কামনা ও রিপুসহ ব্যক্তির ওপর বিজয়ী না হয়। আল্লাহ তা‘আলা দেহকে সৃষ্টি করেছেন রূহের একটি বাহন হিসেবে। রূহ যখন মানুষের দেহকে পরিচালনা করে তখন মানুষ সত্যিকার মানুষে পরিণত হয়। পক্ষান্তরে রূহ যখন দেহের অনুগত হয়ে পড়ে মানুষ তখন তার মনুষ্যত্ব থেকে শূন্য হয়ে পড়ে।

পবিত্র কুরআনে নামায:
ঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁ
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে নামাযের ব্যাপারে খুবই গুরুত্বারোপ করেছেন এবং নামায ও নামাযীকে সম্মানিত করেছেন। কুরআনের অনেক জায়গায় বিভিন্ন ইবাদতের সাথে বিশেষভাবে নামাযের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন আল্লাহ তাআ’লা এরশাদ করেন: إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا “নিশ্চয় নামায মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।” (সূরা আন নিসা, আয়াত: ১০৩) حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَىٰ وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ“তোমরা সমস্ত নামাযের প্রতি যতœবান হও, বিশেষ করে মাধ্যম (আসরের) নামায। আর আল্লাহর সমীপে কাকুতি-মিনতির সাথে দাঁড়াও”। (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত: ২৩৮)
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ করে বলা হয় قُل لِّعِبَادِيَ الَّذِينَ آمَنُوا يُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُنفِقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ يَوْمٌ لَّا بَيْعٌ فِيهِ وَلَا خِلَالٌ ‘আমার বান্দাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে নামায কায়েম করতে বলুন।’ (সূরা ইব্রাহিম:৩১)।

আল্লাহ তাআ’লা এরশাদ করেন: وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ ‘তোমরা নামায কায়েম করো, জাযাত প্রদান করো এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু করো। (সূরা বাকারা, আয়াত:৪৩)।
আল্লাহ তা’লা এরশাদ করেন: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ارْكَعُوا وَاسْجُدُوا وَاعْبُدُوا رَبَّكُمْ وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ‘ওহে যারা ঈমান এনেছ, তোমরা রুকু করো, সাজদা করো ও তোমাদের রবের ইবাদত করো এবং সৎ কা

আল্লাহ তাআ’লা এরশাদ করেন: وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا ۖ لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا ۖ نَّحْنُ نَرْزُقُكَ ۗ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَىٰ‘আর আপনার পরিবারবর্গকে নামাযের আদেশ দিন এবং আপনি নিজেও এতে অবিচল থাকুন। (সূরা ত্বহা,আয়াত-১৩২)

সফলতা ও সম্মানিত স্থান জান্নাতে প্রবেশকে আল্লাহ তাআলা নামাযের উপরই স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন: قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ“মোমিনগণ সফলকাম, যারা তাদের সালাতে নম্রতা ও ভীতির সাথে দ-ায়মান হয়।“ (সূরা মোমিন: ১-২)
قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى* وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى“সফলকাম ব্যক্তি সে-ই যে পবিত্রতা অর্জন করেছে। আপন প্রতিপালকের নাম স্মরণ করেছে এবং নামায আদায় করেছে।’ (সূরা: আল আলাক, আয়াত ১৪-১৫) অতঃপর বলেন:
وَالَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ .أُولَٰئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ . الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
“আর যারা তাদের সালাতে যতœবান, তারাই জান্নাতের ওয়ারিশ-যারা ফিরদাউসের ওয়ারিশ হবে এবং তথায় তারা চিরকাল থাকবে। (সুরা আল-মোমিন:৯,১০,১১)
নামায পরিত্যাগকারীর জন্য আল্লাহর আযাব অপরিহার্য, ইরশাদ হয়েছে:
—————————————————————–
“অতঃপর তাদের পরে আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা নামায বিনষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং তারা শীগ্রই জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে”। (সূরা মারয়াম, আয়াত: ৫৯) দোজখের কঠিন শাস্তিতে নিক্ষিপ্তদের সম্পর্কে বলা হয়েছে مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ. قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ “কী অপরাধ তোমাদের দোযখে টেনে আনা হলো? তারা উত্তরে বলবে, আমরা মুসল্লিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না তথা নামায আদায় করতাম না। (সূরা আল মুদাসসির, আয়াত ৪২-৪৩)।

হাদীস শরীফে নামায:
ঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁ
আল্লাহর একাত্ববাদ ও হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রেসালতের স্বাক্ষ্য দেয়ার পর নামায হল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুকন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমানের পরেই নামাযের কথা উল্লেখ করে বলেন, عَنِ ابْنِ عُمَرَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ্রبُنِيَ الإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَগ্ধ.ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি: ১. এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ নেই এবং হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল। ২. নামায কায়েম করা। ৩. যাকাত প্রদান করা। ৪. রমযানের রোযা রাখা। ৫. বাইতুল্লাহর হজ করা। (বোখারি: ৭ মুসলিম: ১৯)
أخرجه البُخاريُّ في ্রصحيحهগ্ধ (৮، ৪৫১৫)، وفي ্রالتاريخ الكبيرগ্ধ (৪/ ২১৩)، (৮/ ৩১৯، ৩২২)، ومُسلِمٌ (১৬)، وفي ্রالتمييزগ্ধ (৪)، والنَّسائِيُّ (৮/ ১০৭، ১০৮)، والتِّرمِذِيُّ (২৬০৯)، وأحمد (২/ ২৬، ৯২، ৯৩، ১২০

তিনি আরো বলেনرَأْسُ الْأَمْرِ الْإِسْلَامُ، وَعَمُودُهُ الصَّلَاةُ ، وَذِرْوَةُ سَنَامِهِ الْجِهَادُ “সবকিছুর মূল হল ইসলাম, আর ইসলামের খুঁটি নামায, আর ইসলামের শীর্ষ পীঠ হল জিহাদ। (তিরমিযি:৩৫৪১)
رواه أحمد : ৫ / ২৩১ ، والترمذي ( ২৬১৬ ) وصححه ؛ والنسائي في الكبرى ( ১১৩৯৪ ) ،وابن ماجة(৩৯৭৩)،والطبرانيفي الكبير:২০/১৩০،১৩১ ( ২৬৬ ) ، والحاكم : ২ / ৪১২ ، ৪১৩ ، وصححه على شرطيهما ، ووافقه الذهبي .

নামায আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বোত্তম আমল: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: اسْتَقِيمُوا وَلَنْ تُحْصُوا وَاعْلَمُوا أَنَّ خَيْرَ أَعْمَالِكُمْ الصَّلَاةُ وَلَا يُحَافِظُ عَلَى الْوُضُوءِ إِلَّا مُؤْمِنٌতোমরা অটুট ও অবিচল থাক, গণনা করো না, আর মনে রাখবে তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল নামায, একজন মোমিন অবশ্যই সর্বদা ওযুর সংরক্ষণ করতে থাকে। (ইবনে মাজাহ:২৭৩)
أخرجه مالك. كتاب الصلاة: الباب الأول: فضل الصلاة. (২/১৭৫) رَوَاهُ الْأَعْمَشُ الطيالسي (৯৯৬) وأحمد (২২৪৩৬) (২২৩৭৮) والدارمي (৬৫৫) والروياني (৫৯৮) ومحمد بن نصر في تعظيم قدرة الصلاة (১৭০)ومَنْصُور، ابن المبارك في الزهد (১০৪০) وأحمد في الزهد (১২০৪) والدارمي (৬৫৫) وابن ماجة (২৭৩) وأبو عبيد في الطهور (১৬) والروياني (৫৯৮) والطبراني في الأوسط (৭০১৯) والصغير (১০১১) ومحمد بن نصر في تعظيم قدرة الصلاة (১৭০)وَيَزِيدُ بْنُ أَبِي زِيَاد، مسند الروياني (৬০২) ومحمد بن نصر في تعظيم قدرة الصلاة (১৭০)

নামায নূর:
———–
যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:
عَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الطُّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَأُ الْمِيزَانَ وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَآَنِ أَوْ تَمْلَأُ مَا بَيْنَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالصَّلَاةُ نُورٌ وَالصَّدَقَةُ بُرْهَانٌ وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ وَالْقُرْآنُ حُجَّةٌ لَكَ أَوْ عَلَيْكَ كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو فَبَايِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا (أخرجه مسلم كتاب: الطهارة، باب: فضل الوضوء، (২২৩)،
পবিত্রতা ইমানের অর্ধেক আর আলহামদুলিল্লাহ পাল্লাকে সম্পূর্ণ করে, সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পূর্ণ করে। নামায নূর-আলো। দান খয়রাত প্রমাণ স্বরূপ। ধৈর্য উজ্জলতা আর কোরআন তোমার পক্ষে প্রমাণ অথবা তোমার বিপক্ষে প্রমাণ। (মুসলিম:৩২৭)

নামায আল্লাহর নৈকট্য ও উচ্চ-মর্যাদা লাভের উপকরণ:
——————————————————–
عن معدان بن أبي طلحة قال : ” لَقِيتُ ثَوْبَانَ مَوْلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ أَعْمَلُهُ يُدْخِلُنِي اللَّهُ بِهِ الْجَنَّةَ – أَوْ قَالَ قُلْتُ : بِأَحَبِّ الْأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ – فَسَكَتَ ، ثُمَّ سَأَلْتُهُ فَسَكَتَ ، ثُمَّ سَأَلْتُهُ الثَّالِثَةَ فَقَالَ : سَأَلْتُ عَنْ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : عَلَيْكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ لِلَّهِ ، فَإِنَّكَ لَا تَسْجُدُ لِلَّهِ سَجْدَةً إِلَّا رَفَعَكَ اللَّهُ بِهَا دَرَجَةً ، وَحَطَّ عَنْكَ بِهَا خَطِيئَةً ( رواه مسلم في ” صحيحه ” (৪৮৮)
সাওবান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এমন আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন, তুমি বেশি করে আল্লাহর জন্য সেজদা-নামায আদায় করতে থাক, কারণ তোমার প্রতিটি সেজদার কারণে আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার গুনাহ মাপ করবেন। (মুসলিম:৭৩৫ )

عَنْ عَبْدِ اللّه بن مَسْعُودٍ رضي اللّه عنه قال: ” سَأَلْتُ رَسُولَ اللّه صَلَّى اللّه عَلَيْهِ وَسلَّمَ: أَي الْعَمَلِ أَحَبُّ إلى اللّه؟ قال: ” الصَّلاةُ عَلَى وَقْتِهَا”. قُلْتُ: ثُمَّ أيٌّ ؟ قال: ” بِرُّ الْوالِدَيْنِ “. قُلْتُ: ثُمَّ أيٌّ ؟ قال: ” الجِهَادُ في سَبِيلِ اللّه (متفق عليه). صحيح البخاري গ্ধ كتاب الجهاد والسير ২৬৩০ )
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহর নিকট কোন আমল সবচেয়ে বেশি প্রিয় ? তিনি এরশাদ করেন: সময় মত নামায আদায় করা, আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনটি? উত্তরে তিনি এরশাদ করেন: মাতা পিতার সাথে সদাচরন করা। আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনটি? উত্তরে এরশাদ করেন: আল্লাহর পথে জিহাদ করা। (বোখারি:৪৯৬)

এই নামায সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, وَجُعِلَتْ قُرَّةُ عَيْنِي فِي الصَّلاةِ “সালাতেই আমার চোখ জুড়ানো ও শীতলতা নিহিত।” (নাসাঈ:৩৮৭৮) এবং হযরত বেলাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন: “তুমি নামাযের ব্যবস্থা কর এবং তার মাধ্যমে আমাকে তৃপ্ত কর। (আবু দাউদ:৪৩৩৩)
وقد رواه النسائي ( ৩৯৩৯ ) من حديث أنس بن مالك – رضي الله عنه – .وصححه الحاكم ( ২ / ১৭৪ ) ووافقه الذهبي ، وصححه الحافظ ابن حجر في ” فتح الباري ” ( ৩ /১৫ ) و ( ১১ / ৩৪৫ ).
নামায গুনাহ হতে পরিত্রাণ: নামাযের মাধ্যমে ছগীরা তথা ছোট ছোট গুনাহগুলো হতে পরিত্রাণ লাভ করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ হয়। হাদীসে এসেছে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنَّ نَهْرًا بِبَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ هَلْ يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْءٌ؟ قَالُوا: لَا يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْءٌ. قَالَ: فَذَلِكَ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ يَمْحُو اللَّهُ بِهِنَّ الْخَطَايَا ( صحيح البخاري، برقم: (৫২৮)، وصحيح مسلم، برقم (৬৬৭).
“যদি তোমাদের কারো (বাড়ীর) দরজার সামনে প্রবাহমান নদী থাকে এবং তাতে প্রত্যেক দিন পাঁচ বার গোসল করে, তাহলে কি তার (শরীরে) ময়লা অবশিষ্ট থাকবে? (সাহাবীগণ) বললেন, ‘না’। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘অনুরূপভাবে আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের দ্বারা (বান্দার) গুনাহকে মিটিয়ে দেন’। (বুখারী ও মুসলিম)

عَنْ أَبِي ذَرٍّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ زَمَنَ الشِّتَاءِ وَالْوَرَقُ يَتَهَافَتُ فَأَخَذَ بِغُصْنَيْنِ مِنْ شَجَرَةٍ قَالَ فَجَعَلَ ذَلِكَ الْوَرَقُ يَتَهَافَتُ قَالَ فَقَالَ يَا أَبَا ذَرٍّ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ إِنَّ الْعَبْدَ الْمُسْلِمَ لَيُصَلِّ الصَّلَاةَ يُرِيدُ بِهَا وَجْهَ اللَّهِ فَتَهَافَتُ عَنْهُ ذُنُوبُهُ كَمَا يَتَهَافَتُ هَذَا الْوَرَقُ عَنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ (২১০৪৬ مسند أحمد مسند الأنصار. ১/১৯২ المحدث المنذري خلاصة حكم المحدث إسناده حسن في الترغيب والترهيب)
তিনি আরো একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে বলেন, মুসলিম বান্দা যখন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নামায আদায় করে তখন তার গুনাহ এমনভাবে ঝরে পড়তে থাকে যেমন বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়ে। (আহমদ: ২০৫৭৬)

فقد روى مسلم في صحيحه من حديث عُثْمَانَ ـ رضي الله عنه ـ أنه دَعَا بِطَهُورٍ فَقَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَا مِنْ امْرِئٍ مُسْلِمٍ تَحْضُرُهُ صَلَاةٌ مَكْتُوبَةٌ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهَا وَخُشُوعَهَا وَرُكُوعَهَا إِلَّا كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا قَبْلَهَا مِنْ الذُّنُوبِ مَا لَمْ يُؤْتِ كَبِيرَةً، وَذَلِكَ الدَّهْرَ كُلَّهُ.( صحيح مسلم গ্ধ كتاب الطهارة. رقم الحديث-২২৭)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে কোন মুসলমানের জন্য যখন ফরয নামাযের সময় উপস্থিত হয়, অত:পর সে সুন্দরভাবে ওযু করে এবং সুন্দরভাবে রুকু সাজদা করে, এতে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। যদি সে কোন কবিরা গুনাহ না করে, আর এভাবে সর্বদা চলতে থাকে।(মুসলিম:৩৩৫)

No comments

Powered by Blogger.