আওলিয়া কিরামের নামে পালিত পশু সম্পর্কিত আপত্তিসমূহ ও এর জবাব

দ্বিতীয় অধ্যায়

আওলিয়া কিরামের নামে পালিত পশু সম্পর্কিত আপত্তিসমূহ ও এর জবাব


১ নং আপত্তিঃ


 وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ এ আয়াতে أُهِلَّ শব্দটি اِهْلَالْ থেকে গঠন করা হয়েছে এবং এর আভিধানিক অর্থ যবেহ করার সময় ডাকা নয় বরং যে কোন সময় ডাকা। সুতরাং যে পশুকে জীবিতাবস্থায় বা যবেহ করার সময় খোদা ভিন্ন অন্য কারো নামে সম্বোধন করা হয়, সে পশু মৃত তুল্য তথা হারাম।  তাই গাউছে পাকের নামে পালিত গরু বা শেখ সদ্দুকীর নামে পালিত গাভী যদি ওব খোদার নামে যবেহ করা হয়, হারাম হবে।

(এ আপত্তিটা মূলতঃ হযরত শাহ আবদুল আযীযের (কুঃ সিঃ) তিনি এ মাসআলায় মারাত্মক ভুল করেছেন।)


উত্তরঃ اِهْلَالْ এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে যে কোন সময় ডাকা। কিন্তু প্রচলিত অর্থ হচ্ছে যবেহ করার সময় ডাকা। এ আয়াতে প্রচলিত অর্থ বোঝানো হয়েছে। صلوة এর শাব্দিক অর্থ যে কোন দুআ কিন্তু এর প্রচলিত অর্থ হলো নামায। اقيمو الصلوة (নামায কায়েম কর) বলতে ফরয নামায বোঝাবে, সাধারণ দুআ নয়।


✧ তফসীরে কবীরে এ আয়াতে ব্যবহৃত ما أُهِلَّ এর প্রেক্ষিতে বর্ণিত আছে-

الْإِهْلَالُ أَصْلُهُ رَفْعُ الصَّوْتِ.... هَذَا مَعْنَى الْإِهْلَالِ فِي اللُّغَةِ، ثُمَّ قِيلَ لِلْمُحْرِمِ

এর অর্থ হচ্ছে আওয়াজ বড় করা (ডাকা)। এটা হচ্ছে শাব্দিক অর্থ। অতঃপর মোহরমকে বলা হয়েছে ..........!)  ৩৮৪

➥384. ইমাম রাজী, তাফসিরে কাবীর, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯২, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, ইরান।


✧ অনুরূপ বয়যাবী শরীফের হাশিয়ায় (শিহাব লিখিত) একই আয়াতে ما أُهِلَّ এর, প্রেক্ষিতে উল্লে­খিত আছে-

اى رَفْعُ به الصَّوْتِ الخ هذا أَصْلُهُ ثم جعل عبارة عما ذبح لغير الله

অর্থাৎ সেটাকে ডাকা হয়েছিল- এটা হলো اِهْلَالْ এর শাব্দিক অর্থ। অতঃপর أُهِلَّ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে সেই পশু যেটা খোদা ভিন্ন অন্য নামে যবেহ করা হবে।

যদি এখানে اِهْلَالْ এর শাব্দিক অর্থ গ্রহণ করা হয়, তাহলে এতে কয়েকটি বৈপরীত্যের সন্মুখীন হতে হবে।


প্রথমতঃ এ ব্যাখ্যা তাফসীরকারকদের সর্বসম্মত অভিমত ও সাহাবায়ে কিরামের উক্তিসমূহের বিপরীত হবে। তাফসীরকারকদের অভিমত আমি প্রথম অধ্যায়ে বর্ণনা করেছি। এখন সাহাবায়ে কিরাম ও অন্যদের বক্তব্য নিরীক্ষণ করুন।


✧ তাফসীরে দুররে মনসুরে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে বর্ণিত আছে-

أخرج ابْن الْمُنْذر عَن ابْن عَبَّاس فِي قَوْله {وَمَا أهل بِهِ} قَالَ: ذبح

وَأخرج ابْن جرير عَن ابْن عَبَّاس فِي قَوْله {وَمَا أهل بِهِ لغير الله} يَعْنِي مَا أهلّ للطواغيت

وَأخرج ابْن أبي حَاتِم عَن مُجَاهِد {وَمَا أهل بِهِ} قَالَ: مَا ذبح لغير لله

وَأخرج ابْن أبي حَاتِم عَن أبي الْعَالِيَة {وَمَا أهلَّ بِهِ لغير الله} يَقُول: مَا ذكر عَلَيْهِ اسْم غير الله

অর্থাৎ হযরত ইবনে মুনযার হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এর বরাত দিয়ে وَمَا أهل এর অর্থ করেছেন ‘যা যবেহ করা হয়েছে এবং হযরত ইবনে জরির হযরত ইবনে আব্বাসের বরাত দিয়ে وَمَا أهل এর অর্থ করেছেন ‘যা উপাস্যদের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।” হযরত আবি হাতেম হযরত মুজাহিদ এর বরাত দিয়ে وَمَا أهل এর অর্থ করেছেন-যেটা খোদা ভিন্ন অন্য নামে যবেহ করা হয় এবং হযরত আবি হাতেম (رضي الله عنه) হযরত আবি আলিয়া এর বরাত দিয়ে এর অর্থ করেছেন-ওটার উপর খোদা ভিন্ন অন্য যেই নাম উল্লে­খ করা হয়েছে।  ৩৮৫

➥385. ইমাম সুয়ূতি, আদ্দুররুল মানছুর, ১/৪০৭ পৃ:


✧ তাফসীরে মাযহারীতে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে উল্লে­খিত আছে।

قال الربيع بن انس يعنى ما ذكر عند ذبحه اسم غير الله

-রবী ইবনে আনাস (رضي الله عنه) বলেছেন যবেহ করার সময় খোদা ভিন্ন যে নাম উল্লে­খিত হয়েছে।  ৩৮৬

➥386. কাযি সানাউল্লাহ পানিপথি, তাফসিরে মাযহারী, ১/১৭০ পৃ:


উপরোক্ত ইবারত থেকে বোঝা গেল যে বিশিষ্ট সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেঈনের অভিমত হচ্ছে- এ আয়াতের ভাবার্থ হলো খোদা ভিন্ন অন্য নামে যবেহ করা।


দ্বিতীয়তঃ তাদের নির্বাচিত এ অর্থ স্বয়ং কুরআন করীমেরও বিপরীত।


✧ যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-

مَا جَعَلَ اللَّهُ مِنْ بَحِيرَةٍ وَلَا سَائِبَةٍ وَلَا وَصِيلَةٍ وَلَا حَامٍ وَلَكِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ

বহীরা, (উপর্যুপরি দশ শাবক প্রসবকারী যে পশু দেবতার নামে উৎসর্গ করা হতো) সাইবা,  (যে পশু দেবতার নামে ছেড়ে দেয়া হতো) ওসীলা (উপর্যুপরী মাদী বাচ্চা প্রসবকারী যে উষ্ট্রী দেবতার নামে ছেড়ে দেওয়া হতো) ও হাম (প্রজনন কাজে নিয়োজিত অধিক বয়স্ক যে উষ্ট্র দেবতার নামে ছেড়ে দেয়া হতো) আল্লাহ স্থির করেননি; কিন্তু কাফিরগণ আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে। এ চার পশু (বহীরা, সাইবা ইত্যাদি) হলো ওইগুলো, যেগুলোকে আরবের কাফিরগণ দেবতার নামে ছেড়ে দিত এবং ওগুলোকে হারাম মনে করতো।  ৩৮৭

➥387. সূরা মায়েদা, আয়াত নং-১০৩।


কুরআন করীম এ হারাম মনে করাটাকে অগ্রাহ্য করেছেন। অথচ জীবিতাবস্থায় এগুলোর উপর দেবতার নাম নেয়া হয়েছিল। তবুও ওগুলোকে যবেহ করে খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।


كُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ

✧ আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে যা দান করেছেন, তা খাও এবং শয়তানের অনুসরণ করো না  ৩৮৮

➥388. সূরা আনআম, আয়াত নং-১৪২।


✧ তফসীরে ফতহুল বয়ানে مَا جَعَلَ اللَّهُ مِنْ بَحِيرَةٍ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে এবং মুসলিম শরীফের শরাহ নব্বীর الصفة التى يعرف بها فى الدنيا اهل الجنة শীর্ষক অধ্যায়ের ৩৮৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে-

والمراد إنكار ما حرموا على أنفسهم من السائبة والوصيلة والبحيرة والحامي وغير ذلك وأنها لم تصر حراما بتحريمهم

অর্থাৎ এ আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে ওসব পশু হারাম সাব্যস্ত হওয়াকে অস্বীকার করা, যেগুলোকে কাফিরগণ হারাম মনে করতো, যেমন বহীরা ইত্যাদি। এসব পশু ওরা হারাম বললেও হারাম হবে না।


এর থেকে বোঝা গেল হিন্দুরা যে ষাড় দেবতার নামে ছেড়ে দেয়, তা হারাম হবে না। যদি কোন মুসলমান বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করে, তাহলে হালাল হবে। অবশ্য অন্যজনের মালিকানাধীন হওয়ার কারণে এ রকম করা নিষেধ।


✧ আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ ফরমান-

وَقَالُوا هَذِهِ أَنْعَامٌ وَحَرْثٌ حِجْرٌ لَا يَطْعَمُهَا إِلَّا مَنْ نَشَاءُ بِزَعْمِهِمْ

-কাফিরগণ তাদের ধারণা মতে বলে যে এ সব গবাদি পশু ও শস্যক্ষেত্র নিষিদ্ধ। আমরা যাকে ইচ্ছা করি সে ব্যতীত অন্য কেউ এগুলো খেতে পারবে না। ৩৮৯

➥389. সূরা আন’আম, আয়াত নং-১৩৮।


✧ আরও ইরশাদ ফরমান-

وَقَالُوا مَا فِي بُطُونِ هَذِهِ الْأَنْعَامِ خَالِصَةٌ لِذُكُورِنَا وَمُحَرَّمٌ عَلَى أَزْوَاجِنَا

অর্থাৎ কাফিরগণ বলে, এসব গবাদি পশুর গর্ভে যেসব বাচ্চা আছে, তা আমাদের পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট এবং আমাদের মহিলাদের জন্য হারাম। ৩৯০

➥390. সূরা আন’আম, আয়াত নং-১৩৯।


 এগুলো হচ্ছে সেইসব শস্যক্ষেতসমূহ এবং পশুগুলো, যা দেবতাদের নামে উৎসর্গ করা হতো এবং কাফিরগণ এসবের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতো। কুরআন করীম এ নিষেধাজ্ঞাকে নাকচ করে দিয়েছেন। তাহলে যখন দেবতার নামে উৎসর্গকৃত পশু হারাম হলো না, আল্লাহর ওলীদের ফাতিহার উদ্দেশ্যে পালিত পশু কেন হারাম হবে?


তৃতীয়তঃ أهل শব্দের এ অর্থ ফকীহগণের বিশ্লেষণেরও বিপরীত। আমি এ আলোচনার প্রথম অধ্যায়ে ফাত্ওয়ায়ে আলমগীরীর ইবারত উদ্ধৃত করে দেখিয়েছি যে কোন মুশরিক বা অগ্নি পূজারী দেবতা বা অগ্নি পূজার নামে উৎসর্গকৃত পশু কোন মুসলিম কর্তৃক যবেহ করালো এবং সেই মুসলমান বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করলো, তাহলে সেটা হালাল। অনুরূপ তফসীরাতে আহমদীয়ার একটি ইবারতও উল্লে­খ করেছি, যেথায় বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর ওলীগণের নামে মানতকৃত পালিত পশু হালাল।


চতুর্থতঃ এ অর্থ আকল বা যুক্তিরও বিপরীত। কেননা, যদি أهل এর শাব্দিক অর্থ গ্রহণ করা হয় (অর্থাৎ কোন পশুর বেলায় এর জীবিতাবস্থায় বা যবেহ করার সময় খোদা ভিন্ন অন্য নাম নেয়া হলে সেটা হারাম হয়ে যায়) তাহলে পশু ভিন্ন অন্যান্য জিনিসও গায়রুল্লাহর সাথে সম্পৃক্ততার দ্বারা হারাম হওয়া চাই, কারণ কুরআন শরীফে আছে وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ (প্রত্যেক ঙক  যাকে গায়রুল্লাহর (খোদা ভিন্ন অন্য নাম, নামে ডাকা হবে) এখানে ما শব্দে পশুর কোন শর্তারোপ নাই। আর সান্নিধ্যের নিয়তে ডাকা হোক বা অন্য কোন নিয়তে যে কোন অবস্থায় হারাম হওয়া চাই। তাহলে যায়েদের গরু, উমরের মহিষ, নিশানের আম, বকরের বাগানের ফুল, উম্মে সাঈদের কূপ, অমুকের মসজিদ, আমার ঘর, দেওবন্দীদের মাদ্রাসা, ইমাম বুখারীর কিতাব ইত্যাদি সম্বন্ধ পদ নাজায়েয হয়ে গেছে এবং ওসবের ব্যবহার হারাম হয়ে গেল। আর বুখারী, তিরমিযী তো খাঁটি শিরক হয়ে গেল। কেন না এগুলোকে বুখারী ও তিরমিযীর সাথে অর্থাৎ গায়রুল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। জনাব কোন মহিলা যতদিন পযর্ন্ত কেবল আল্লাহর বান্দা হিসেবে থাকে, ততদিন সে সবার জন্য হারাম। কিন্তু যখন ওর বেলায় খোদা ভিন্ন অন্য নাম প্রয়োগ হয়, অর্থাৎ অমুকের স্ত্রী বলা হয়, তখন সে অমুকের জন্য হালাল হয়ে গেল। কোন কোন সময় গায়রুল্লাহর সম্পৃক্ততার ফলে জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পায়। হায়দরাবাদে হুযুর গাউছে পাক (رضي الله عنه) এর হাতের লিখা একটি কুরআন শরীফ ছিল। বৃটিশ সরকার দু’লাখ টাকা দিয়ে খরিদ করতে চেয়েছিল কিন্তু দেয়া হয়নি। আমীর আবদুর রহমান খানের ব্যবহৃত গালিচা জনৈক আমেরিকাবাসী পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছিল। পুরোনো টিকেটও মূল্যবান হয়ে থাকে (সরকার আলিপুরী) মোট কথা, أُهِلَّ শব্দের এ ধরনের অর্থ কুরআন, হাদীছ ও যুক্তির বিপরীত।


পঞ্চমতঃ যদি কেউ কোন পশু দেবতার নামে পালন করালো, পরবর্তীতে সে মুসলমান হয়ে গেল এবং খালেস নিয়তে সেটাকে জবেহ করলো, তাহলে এটা সর্ব সম্মতিক্রমে হালাল। অথচ এটাও أُهِلَّ এর অন্তর্ভূক্ত হলো। কারণ একবারও যদি গায়রুল্লাহর নাম নেয়া হয়, তাহলে ما أُهِلَّ এর পর্যায়ে পড়ে যায়। তাই মানতেই হবে যে যবেহ করার সময় যে নাম হয় নেয়া হয় সেটাই ধর্তব্য; আগের কথা নয়। যদি কেউ গায়রুল্লাহর নামে যবেহ করলো অতঃপর মাংসের ক্ষেত্রে আল্লাহর নাম নিল, সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়। অনুরূপ যদি জীবিতাবস্থায় ডাকাটা গ্রহণযোগ্য হতো, তাহলে যে ব্যক্তি কোন পশুকে জীবিতাবস্থায় গায়রুল্লাহর নামে আখ্যায়িত করে পরবর্তীতে তওবা করে আল্লাহর নামের যবেহ করলো, সেটা হারাম হতো।


ষষ্ঠতঃ যদি أُهِلَّ শব্দের শাব্দিক অর্থইবা গ্রহণ করা হয়, তবুও بِهِ শব্দের দ্বারা সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়। যেমন بِهِ এর ب অর্থ হবে فِىْ এর মত আর مضاف পদটা উহ্য ধরে নিতে হবে অর্থাৎ فى ذبحه হবে। তা নাহলে بِهِ শব্দের কি তাৎপর্য হতে পারে? এটা না থাকলেও তো অর্থের বেলায় কোন অসুবিধা হয় না যেমন সুলাইমান জুমল وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তা-ই উল্লে­খ করেছেন। সুতরাং এখানেও একই অর্থ প্রকাশ পেল অর্থাৎ যে পশু যবেহ করার সময় গায়রুল্লাহর নাম নেয়া হয়, সেটা হারাম। যে কোন অবস্থায় তাদের সেই অর্থ অগ্রাহ্য।


২য় আপত্তিঃ 


ফিকহ শাস্ত্রের একটি মাসআলা হচ্ছে: যে পশুকে বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করা হয় কিন্তু যবহের উদ্দেম্যে যদি গায়রুল্লাহর নৈকট্য প্রত্যাশী হয়ে থাকে, তাহলে সেটা হারাম। অনুরূপ গেয়ারবী শরীফ পালনকারীদের নিয়ত হয়ে থাকে গাউছে পাককে সন্তুষ্টকরণ। তাই তাদের যবেহের মধ্যেও গায়রুল্লাহর সান্নিধ্য প্রকাশ পায়। অতএব, যদিওবা বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করা হলো, কিন্তু উপরোক্ত কায়দা অনুসারে হারাম হলে গেল। (এ কায়দার বিশ্লেষণ ৩নং আপত্তির উত্তরে দেয়া হয়েছে।

উত্তরঃ যবেহ চার প্রকার। প্রথমতঃ কেবল রক্তপাতের উদ্দেশ্যে যবেহ করা এবং মাংসটা আনুষঙ্কিক মাত্র। আর এ রক্তপাতের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা। যেমন কুরবানী, হাদি, আকীকা ও মানতের পশু। এ যবেহটা হচ্ছে ইবাদত এবং এ সবের জন্য সময় ও স্থানের শর্তারোপ করা হয়েছে। যেমন কুরবানী নির্দিস্ট তারিখে করাটাই ইবাদ, এর আগে পিছে নয়, হাদিটা (হজ্বের কুরবানী) হেরম শরীফে করাটা ইবাদতও নয় আবার গুনাহও নয়। যদি বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করে, তাহলে পশুটা হালাল হবে, অন্যথায় হারাম। তৃতীয়তঃ মাংস খাওয়ার উদ্দেশ্যে যবেহগ করা। যেমন বিবাহ, ওলিমা ইত্যাদি বা মাংসা বিক্রি করার জন্য যবেহ করা। অনুরূপ বুযর্গানে কিরামের ফাতিহা উপলক্ষে যবেহটা হয়ে থাকে মাংসের জন্য। অর্থাৎ মাংসটা মূল উদ্দেশ্য। এখানেও যদি বিসমিল্লাহ বলে যবেহগ করা হয়, তাহলে হালাল, অন্যথায় হারাম। চতুর্থতঃ খোদা ভিন্ন অন্যকে রাজি করানোর আশায় কেবল রক্তপাত করার নিয়তে যবেহ করা এবং মাংস খাওয়ার কোন উদ্দেশ্য থাকে না। যেমন হিন্দুরা দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে পশু বলি দিয়ে থাকে এবং সে ক্ষেত্রে রক্তপাতের মাধ্যমে দেবতাকে তুষ্ট করাটাই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। এ ধরনের পশু বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করলেও হারাম। তবে শর্ত হলো বলীর নিয়ত যবেহকারীর হলে, যবেহ কর্তার (মালিক) নয়। তবে শর্ত উত্থাপিত ফিকহের সেই মাসআলার এটাই বোছানো হয়েছে।


✧ কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান:

وَمَا ذُبِحَ عَلَى النُّصُبِ

ওই পশু যেটা দেবতার উদ্দেশ্যে যবেহ করা হবে, সেটা হারাম। ৩৯১

➥391. সূূরা মায়েদা, আয়াত নং-৩।


✧ আল্লামা সুলাইমান জুমুল এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেছেন:

اى ما قصد بذبحه النصب ولم يذكر اسمها عند ذبحه بل قصد تعظيمها بذبحه فعلى بمعنى اللام فليس هذا مكررا مع ما سبق اذ ذاك فيما ذكر عند ذبحه اسم الصنم وهذا فيما قصد بذبحه تعظيم الصنم من غير ذكره

অর্থাৎ ওই পশুও হারাম যেটার যবেহ দ্বারা দেবতা তুষ্ট করাই মকসুদ যদিওবা ওটা যবেহের সময় দেবতার নাম নেয়া হয়নি কিন্তু দেবতার সম্মানের জন্য করা হয়েছে। আয়াতে على ব্যবহৃত হয়েছে لام এর অর্থে। সুতরাং এ আয়াত আগের আয়াতের পুনরাবৃত্তি নয়। কেননা ওই আয়াতে ما أُهِلَّ দ্বারা ওটাই বোঝানো হয়েছে যেটার উপর দেবতাদের নাম নেয়া হবে আর এ আয়াত দ্বারা সেই পশুকে বোহঝানো হযেছে যার যবেহ দ্বারা দেবতার নাম না নিয়ে কেবল সম্মান করাই উদ্দেশ্য।


সুবহানাল্লাহ! কি উত্তম ব্যাখ্যা দিয়েছেন: যেটা দেবতার নামে যবেহ করা হয় সেটা ما أُهِلَّ এর অন্তর্ভূক্ত এবং যেটার যবেহ দ্বারা গায়রুল্লাহর সম্মান করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, সেটা وَمَا ذُبِحَ عَلَى النُّصُبِএর অন্তর্ভূক্ত। কতেক ফকীহ উভয় ধরনের যবেহকে ما أُهِلَّ দ্বারা প্রমাণ করেছেন। অর্থাৎ তাঁদের ব্যাখ্যা হলো وَمَا ذُبِحَ لتعظيم لِغَيْرِ اللَّهِ

 যেটা গায়রুল্লাহর সম্মানার্থে যবেহ করা হয়েচে। দুরুল মুখতারেও তাই বর্ণিত আছে। মোট কথা হলো পশু হারাম হওয়ার পিছনে দুটি কারণ রয়েছে: এক যবেহ করার সময় গায়রুল্লাহর নাম নেয়া, দুই গায়রুল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য পশুর রক্তপাত করা। উভয়ক্ষেত্রেই মূলতঃ মাংস উদ্দেশ্য নয়; গায়রুল্লাহর সান্নিধ্যই কাম্য। একেই ফকীহগণ হারাম বলেন। কিন্তু গেয়ারবী ও ফাতিহার পশু উপরে উল্লে­খিত তৃতীয় প্রকারের যবেহেরই অন্তর্ভূক্ত, চতুর্থ প্রকারের নয়। কেননা গেয়াবী শরীফ উদযাপনকারীদের উদ্দেশ্য এটাই হয়ে থাকে যে পশুর মাংসের খাবার তৈরী করার আসল উদ্দেশ্য। তাই হারাম হতে পারে না। এ পার্থক্যটা স্মরণ রাখা দরকার। কতেক দেওবন্দী বলে যে, গেয়ারবী শরীফ উদযাপনকারীদের উদ্দেশ্য মাংস নয় কেননা এটা লক্ষ্য করা গেছে যে ওদেরকে মনোনীত পশুর পরিবর্তে যদি ফাতিহার জন্য অতিরিক্ত মাংস বা অন্য পশুর প্রস্তাব দেয়া হয়, এতে ওরা রাজি নয়। সত্যেই যদি মাংস তাদের উদ্দেশ্য হয়, তাহলে এই ধরনের প্রস্তাবে নিশ্চয়ই রাজি হবার কথা। তাই বোঝা গেল যে গাউছে পাকের নামে রক্তপাত করাটাই মূল উদ্দেশ্য। আসলে এটা ভুল ধারণা। নিয়তকারী কোন ধরনের নিয়ত করেছ একমাত্র সেই জানতে পারে। প্রমাণ ছাড়া মুসলমানের উপর খারাপ ধারণা পোষণ করা হারাম।

 إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ আর পশু পরিবর্তনের বেলায় অনীহা প্রকাশ করার কারণ হচ্ছে সম্মান বোধ। তাঁদের ধারণা হলো যেটাকে তারা যত্ম করে মোটা সোটা করেছে, সেটার সাথে অন্য কোনটার তুলনা হয় না। কেউ কেউ ওলিমার জন্য পশু পালন করে। তারাও এর পরিবর্তে অন্য মাংস গ্রহণ করা পছন্দ করে না কতেক লোক ফাতিহার জন্য নতুন বাসন ব্যবহার করে এবং ওগুলোর বাদলাবদলী পছন্দ করে না। আবার অনেকই মনে করে যে পশুর দ্বারা ফাতিহার নিয়তক করা হয়, সেটা বদলানো জাযেয় নয়। যেমন কুরবানীর পশু। অবশ্য এ রকম ধারণা ভুল। কিন্তু ভুল ধারণার জন্য যবেহকৃত পশু হারাম হতে পারে না। সম্মান ও বলীদান এক কথা নয়। সারকথা হলো যবেহ দ্বারা যদি গায়রুল্লাহকে রাজি করানো মকসুদ হয়ে থাকে, তাহলে হারাম আর যদি দাওয়াত বা ফাতিহার জন্য যবেহ করা হয় এবং ফাতিহা ও দাওয়াত কাউকে রাজি করানোর জন্য হয়, তাহলে হালাল। কোন আল্লাহর বান্দাকে রাজি করানোর অর্থ ওর ইবাদত নয়।


৩নং আপত্তিঃ 


✧ দুর্রুল মুখতার ও আলমগীরীর الذبح শীর্ষক অধ্যায়ে এবং ইমাম নববীর শরহে মুসলিমে বর্ণিত আছে:

        

(ذُبِحَ لِقُدُومِ الْأَمِيرِ) وَنَحْوِهِ كَوَاحِدٍ مِنْ الْعُظَمَاءِ (يَحْرُمُ) لِأَنَّهُ أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ (وَلَوْ) وَصْلِيَّةٌ (ذَكَرَ اسْمَ اللَّهِ تَعَالَى)

বাদশা বা কোন বড় লোকের আগমন উপলক্ষে পশু যবেহ করা হারাম যদিওবা আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়। কেননা ওটার ক্ষেত্রে গায়রুল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে। ৩৯২

➥392. হাসকাফী, দুররুল মুখতার, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯৭-১৯৮, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ৬/৩০৯ পৃ:


এর থেকে বোঝা গেল, কারো রেজামন্দির জন্য পশু যবেহ করা হারাম যদিওবা আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়। সুতরাং গেয়ারবীর পশু যে কোন অবস্থায় হারাম, কারণ এটা গাউছে পাকের রেজামন্দির জন্যই করা হয়। তাই আল্লাহর নামে যবেহ করলেও হারাম।


উত্তরঃ এর পরিপূর্ণ উত্তর ২নং আপত্তির উত্তরে দেয়া হয়েছে যে বাদশাহ বা অন্য কারো নামে বলীদানের নিয়তে যদি যবেহ করা হয়, তাহলে সেই পশু হারাম। আর বলীদানের অর্থ হচ্ছে রক্তপাতের দ্বারা ওকে রাজি করানোই প্রধান উদ্দেশ্য, মাংসা আনুষঙ্কিক মাত্র। কিন্তু বাদশাহ ও অন্যান্যদের দাওয়াতের উদ্দেশ্য পশু যবেহ করা হলে সেটা হালাল যদিওবা দাওয়াতের দ্বারা বাদশাহ বা অন্যান্যদের সন্তুষ্টি অভিপ্রায় হয়ে থাকে।


✧ দুর্রুল মুখতারের কিতাবুল যবায়েহের সেই একই জায়গায় বর্ণিত আছে:

(وَلَوْ) ذُبِحَ (لِلضَّيْفِ) (لَا) يَحْرُمُ لِأَنَّهُ سُنَّةُ الْخَلِيلِ وَإِكْرَامُ الضَّيْفِ إكْرَامُ اللَّهِ تَعَالَى. وَالْفَارِقُ أَنَّهُ إنْ قَدَّمَهَا لِيَأْكُلَ مِنْهَا كَانَ الذَّبْحُ لِلَّهِ وَالْمَنْفَعَةُ لِلضَّيْفِ أَوْ لِلْوَلِيمَةِ أَوْ لِلرِّبْحِ، وَإِنْ لَمْ يُقَدِّمْهَا لِيَأْكُلَ مِنْهَا بَلْ يَدْفَعُهَا لِغَيْرِهِ كَانَ لِتَعْظِيمِ غَيْرِ اللَّهِ فَتَحْرُمُ

-‘‘যবেহটা যদি মেহমানের জন্য হয়, তাহলে হারাম নয়। কেননা এটা হযরত খলিলুল্লাহর তরীকা আর মেহমানের সম্মান মানে আল্লাহরই সম্মান। পার্থক্যের কারণটা হলো যদি এর মাংস মেহমানের সামনে রাখা হয় খাবার জন্য তাহলে যবেহটা হবে আল্লাহর জন্য এবং মাংসটা হবে মেহমানের জন্য অথবা মেহমানের সামনে রাখা হলো না, অর্থাৎ খেতে দিল না বরং এমনি কাউকে দিয়ে দিল তাহলে এ সম্মানটা গায়রুল্লাহর জন্য হলো সুতরাং এটা হারাম।’’ ৩৯৩

➥393. হাসকাফী, দুররুল মুখতার, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯৭-১৯৮, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ৬/৩১০ পৃ:


এতে পরিষ্কার বোঝা গেল মাংস উদ্দেশ্য হওয়ার দ্বারা ইবাদত ও গাইর ইবাদতের মধ্যে পার্থক্য প্রকাশ পায়।


✧ একই জায়গায় দুর্রুল মুখতারে আর বর্ণিত আছে:

وَفِي صَيْدِ الْمُنْيَةِ أَنَّهُ يُكْرَهُ وَلَا يَكْفُرُ لِأَنَّا لَا نُسِيءُ الظَّنَّ بِالْمُسْلِمِ أَنَّهُ يَتَقَرَّبُ إلَى الْآدَمِيِّ بِهَذَا النَّحْرِ

-এ রকম করা মাকরুহ। এর দ্বারা যবেহকারী কাফির হবে না। কেননা আমরা মুসলমানের প্রতি বদগুমান করি না যে, সে ওই যবেহর দ্বারা কোন ব্যক্তির ইবাদত করে।’’৩৯৪

➥394. হাসকাফী, দুররুল মুখতার, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯৭-১৯৮, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ৬/৩১০ পৃ:


প্রতীয়মান হলো যে মুসলমানের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা অপরাদ। উক্ত দুর্রুল মুখতারের টীকায় এ প্রসঙ্গে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে। তবে যতটুকু আলোচনা করা হয়েছে, তা যথেষ্ট মনে করি।


✧ তফসীরে রূহুল বয়ানে ষষ্ঠ পারায় আয়াত وَمَا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللَّهِ এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে:

ما يذبح عند استقبال السلطان تقربا اليه افتى اهل بخارى بتحريمه لانه مما اهل به لغير الله. وقال الرافعي هذا غير محرم لانهم انما يذبحونه استبشارا بقدومه فهو كذبح العقيقة لولادة المولود ومثل هذا لا يوجب التحريم كذا فى شرح المشارق

-যে পশু বাদশাহের আগমন উপলক্ষে তার সান্নিধ্য লাভের জন্য যবেহ করা হয়, তাহলে বুখরা এর হারাম হওয়ার ফাতওয়া দিয়েছেন কিন্তু ইমাম শাফেই বলেছেন সে পশু হারাম হবে না, কেননা ওই সমস্ত লোকেরা বাদশাহের আগমনে খুশীতে যবেহ করে। যেমন শিশুর আকিকা, জন্মের খুশীতে ও এরকম অন্যান্য কাজে যবেহকৃত পশু হারাম হবে না। অনুরূপ শরহে মশারেকেও বর্নিত আছে।’’ ৩৯৫

➥395. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৪০।


বোঝা গেল যে ওই সময় এটা সম্ভবতঃ প্রচলন ছিল যে বাদশার আগমনে ঘরে ঘরে পশু যবেহ করা হতো। আজকাল অবশ্য এ প্রথা নেই। তাই যেটা বাদশার ইবাদতের নিয়তে যবেহ করে সেটা হারাম এবং যেটা খুশী প্রকাশ করার জন্য জনগণকে দাওয়াতের নিয়তে যবেহ করা, সেটা হালাল। ফাতওয়ার এ পার্থক্যটা হলো যুগের প্রচলিত প্রথার কারণে। কিন্তু গিয়ারবী শরীফে পশু যবেহের সাথে বাদশার আগমন উপলক্ষে পশু যবেহের কোন সাদৃশ্য নেই।


৪নং আপত্তিঃ 


গেয়ারবী শরীফের নিয়তে গরু-ছাগল পালনকারী হচ্ছে ধর্মদ্রোহী। কেননা গায়রুল্লাহর নামে মানত করা কুফরী আর কাফিক ও ধর্মদ্রোহীর যবেহকৃত পশু হারাম। সুতরাং গেয়ারবী শরীফের অনুসারীদের যবেহকৃত পশু হারাম। শামীর দ্বিতীয় খন্ড কিতাবুস সাওমের نذر الاموت শীর্ষক আলোচনায় বর্ণিত আছে:

وَالنَّذْرُ لِلْمَخْلُوقِ لَا يَجُوزُ لِأَنَّهُ عِبَادَةٌ وَالْعِبَادَةُ لَا تَكُونُ لِمَخْلُوقٍ

-মাখলুকের নামে মানত জায়েয নেই। কেননা এটা ইবাদত আর ইবাদত মাখলুকের জন্য হয় না।’’ ৩৯৬

➥396. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৩৯।


উত্তরঃ এর বিস্তারিত উত্তর আমি এর আগে দিয়েছি যে এ মানত শরীয়তের পরিভাষায় ব্যবহৃত মানত নয়, এটা প্রচলিত অর্থে ব্যবহৃত মানত অর্থাৎ হাদিয়া, নযরানা বা মানত আল্লাহর নামে এবং এটা হচ্ছে উপলক্ষ। এতে কোনটাই শিরক নয়। শিক্ষককে বলা হয়: এ টাকা আপনার নযরানা অর্থাৎ হাদিয়া।


No comments

Powered by Blogger.