নবী পাকﷺ এর নামে কোরবানী দেওয়া মুমিনের দায়িত্ব

কুরবানীর সময় একজন উম্মতের দায়িত্ব কি জানেন? প্রত্যেকউম্মতের জন্য এ বিষয়টা অবশ্যই করনীয়। আসুন দেখি কি সেই
দায়িত্ব।
পবিত্র হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে,
ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﻣَﺮَ ﺑِﻜَﺒْﺶٍ ﺃَﻗْﺮَﻥَ ﻳَﻄَﺄُ ﻓِﻲ ﺳَﻮَﺍﺩٍ ﻭَﻳَﺒْﺮُﻙُ ﻓِﻲ ﺳَﻮَﺍﺩٍ ﻭَﻳَﻨْﻈُﺮُ ﻓِﻲ
ﺳَﻮَﺍﺩٍ ﻓَﺄُﺗِـﻲَ ﺑِﻪِ ﻟِﻴُﻀَﺤِّﻲَ ﺑِﻪِ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَـﻬَﺎ ﻳَﺎ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ﻫَﻠُﻤِّﻲ ﺍﻟْﻤُﺪْﻳَﺔَ . ﺛُـﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﺍﺷْﺤَﺬِﻳﻬَﺎ ﺑِـﺤَﺠَﺮٍ .
ﻓَﻔَﻌَﻠَﺖْ ﺛُـﻢَّ ﺃَﺧَﺬَﻫَﺎ ﻭَﺃَﺧَﺬَ ﺍﻟْﻜَﺒْﺶَ ﻓَﺄَﺿْﺠَﻌَﻪُ ﺛُـﻢَّ ﺫَﺑَـﺤَﻪُ ﺛُـﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﺑِﺎﺳْﻢِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺗَﻘَﺒَّﻞْ ﻣِﻦْ ﻣُـﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﺍٰﻝِ
ﻣُـﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﻣِﻦْ ﺃُﻣَّﺔِ ﻣُـﺤَﻤَّﺪٍ . ﺛُـﻢَّ ﺿَﺤَّﻰ ﺑِﻪِ .
একবার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ
মুবারক করেন, এমন একটি শিংওয়ালা দুম্বা আনতে যা
কালোতে হাঁটে, কালোতে শোয় ও কালোতে দেখে অর্থাৎ
যার পা, পেট ও চোখ সবই কালো। অতঃপর কুরবানী দেয়ার
উদ্দেশ্যে উনার জন্য এরূপ একটি দুম্বা আনা হলো। তখন
তিনি বললেন, হে হযরত উম্মুল মু’মিনীন ছিদ্দীক্বা
আলাইহাস সালাম! ছুরিটি দিন! অতঃপর বললেন, পাথরে
তা ধারালো করুন। হযরত উম্মুল মু’মিনীন ছিদ্দীক্বা
আলাইহাস সালাম বললেন, আমি তা করলাম। অতঃপর তিনি
তা গ্রহণ করলেন এবং দুম্বাটিকে ধরলেন তারপর পার্শ্বদেশ
করে শোয়ালেন এবং যবেহ করতে গিয়ে বিসমিল্লাহ
বললেন আরো বললেন, হে মহান আল্লাহ পাক! আপনি এই
কুরবানী কবুল করুন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-উনার তরফ থেকে এবং উনার সম্মানিত পরিবারের
তরফ থেকে এবং উনার উম্মতদের তরফ থেকে। অতঃপর উক্ত
দুম্বাটি দ্বারা সকালের খাবার খাওয়ালেন।” (মুসলিম
শরীফ- কুরবানী অধ্যায়: হাদীস নম্বর ১৯৬৭ , আবূ দাঊদ
শরীফ- কুরবানী অধ্যায়: হাদীস ২৭৯২)
ﺑِﺎﻟْﻤُﺼَﻠَّﻰ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻰ ﺧُﻄْﺒَﺘَﻪُ ﻧَﺰَﻝَ ﻣِﻦْ ﻣِﻨْﺒَﺮِﻩِ ﻭَﺃُﺗِﻲَ ﺑِﻜَﺒْﺶٍ ﻓَﺬَﺑَـﺤَﻪُ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﻴَﺪِﻩِ
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺍﻟﻠﻪُ ﺃَﻛْﺒَﺮُ ﻫَﺬَﺍ ﻋَﻨّﻲ ﻭَﻋَﻤَّﻦْ ﻟَـﻢْ ﻳُﻀَﺢِّ ﻣِﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ .
অর্থ : “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আমি কুরবানীর হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথে ঈদগাহে
উপস্থিত হলাম। যখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম (নামাযের পর) খুতবা শেষ করলেন এবং মিম্বর
শরীফ থেকে নেমে আসলেন এরপর উনার জন্য একটি দুম্বা
আনা হলো। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম নিজ হাত মুবারকে সেটা যবেহ করলেন এবং
বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বললেন অর্থাৎ বিসমিল্লাহ
আল্লাহু আকবার বলে যবেহ করলেন। আরো বললেন, এই
কুরবানী আমার তরফ থেকে এবং আমার ঐ সকল উম্মতের তরফ
থেকে যারা কুরবানী দেননি অর্থাৎ যাদের কুরবানী করার
সামর্থ নেই।” (আবূ দাঊদ শরীফ- কুরবানী অধ্যায় : হাদীস
২৮১০ , তিরমিযী শরীফ ১৫২১)

ﻋَﻦْ ﺣَﻀْﺮَﺕْ ﺣَﻨَﺶٍ ﺭَﺣْـﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺣَﻀْﺮَﺕْ ﻋَﻠِﻴًّﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ﻳُﻀَﺤّﻰْ ﺑِﻜَﺒْﺸَﻴْﻦِ ﻓَـﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪ ﻣَﺎ
ﻫٰﺬَﺍ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍِﻥَّ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍَﻭْﺻَﺎﻧِـﻰْ ﺍَﻥْ ﺍُﺿَﺤّﻰَ ﻋَﻨْﻪُ ﻓَﺎَﻧَﺎ ﺍُﺿَﺤّﻰْ ﻋَﻨْﻪُ .
অর্থ : “তাবিয়ী হযরত হানাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
আমি হযরত আলী কাররামাল্লাহু রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে
দু’টি দুম্বা কুরবানী করতে দেখে উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম
ইহা কি? অর্থাৎ দু’টি কেন? তিনি বললেন, নিশ্চয়ই হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে ওছীয়ত মুবারক
করেছেন, আমি যেনো উনার পক্ষ হতে কুরবানী করি।
সুতরাং আমি উনার পক্ষ হতে অর্থাৎ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার পক্ষ থেকে একটি কুরবানী
করছি। (আর অপরটি আমার পক্ষ থেকে)।” (আবূ দাঊদ শরীফ –
কুরবানী অধ্যায় : ২৭৯০, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
উপরোক্ত হাদীস শরীফ থেকে যে বিষয়গুলো বোঝা গেলো,
* হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার
উম্মতদের জন্য কুরবানী করেছেন।
* হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সামার্থহীন উম্মতের জন্য কুরবানী করেছেন।
* সর্বপোরী স্বয়ং নিজের জন্য কুরবানী করতে ওসীয়ত
করেছেন।
তাহলে আমাদের করনীয় কি ?
* আমাদের ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে
একটা কুরবানী করা।
একটি কুরবানীর পশুতে সাত নাম হয়। প্রথম নামটা যদি হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হয় তবে সেই
মুবারক ওসীয়তও পালন হলো সেই সাথে কুরবানীটাও
নিশ্চিত কবুল হবে।
আল্লাহ পাক আমাদের কবুল করুন।

No comments

Powered by Blogger.