বিদ্আতের প্রদত্ত সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ প্রসংগে উত্থাপিত আপত্তিসমূহ এবং এসবের জবাব
দ্বিতীয় অধ্যায়
বিদ্আতের প্রদত্ত সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ প্রসংগে উত্থাপিত আপত্তিসমূহ এবং এসবের জবাব
আমি বিদ্আতে আমলী প্রসংগে বলেছি যে, ধর্মীয় বা দুনিয়াবী যে কাজ হুযুর আলাইহিস সালামের পবিত্র যুগের পরে, হয়তো সাহাবায়ে কিরামের যুগে বা এর পরে আবিষ্কৃত হয়েছে, তা বিদ্আত। এ প্রসংগে দু’টি প্রসিদ্ধ আপত্তি আছে।
আপত্তি নং-(১) বিদ্আত এমন ধর্মীয় কাজকে কেবল বলা হবে, যা হুযুর আলাইহিস সালামের পরে চালূ হয়েছে। দুনিয়াবী নতুন কাজ বিদ্আত নয়। সুতরাং, মীলাদ মাহ্ফিল ইত্যাদি বিদ্আত কিন্তু তার-বার্তা, টেলিফোন, রেলগাড়িতে আহরোণ বিদ্আত নয়।
❏ কেননা হাদীছ শরীফে আছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ
-‘‘যে ব্যক্তি আমার ধর্মে নতুন কোন কিছু চালু করে, সে মরদুদ (ধর্মত্যাগী)।’’ ৩২
➥〈 35নং টিকা দেখুন। 〉
أَمْرِنَا শব্দ দ্বারা প্রতীয়মান হচ্ছে, পার্থিব আবিষ্কৃত বস্তুসমূহ বিদ্আত নয়। এমন ধর্মীয় বিদ্আত বলতে কোনটাই হাসনা (উত্তম) নয়, সবই হারাম। কেননা হাদীছ শরীফে সে সবের হোতাকে মরদুদ বলা হয়েছে।
উত্তরঃ ধর্মীয় কাজের শর্তারোপ করাটা মনগড়া কথা এবং সহীহ হাদীছ, উলামায়ে কিরাম, ফকীহগণ ও মুহাদ্দীছেনে কিরামের উক্তি সমূহের বিপরীত। হাদীছ শরীফে আছে كل محدث بدعة -‘‘প্রত্যেক নতুন কাজ বিদ্আত।’’ এখানে ধর্মী বা দুনিয়াবী কাজের কোন উলেখ নেই। অধিকন্তু আমি মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘আশ্আতুল লুমআত ও ‘মিরকাতের’ ভাষ্য উদ্ধৃত করেছি; দ্বীনি কোন শর্তারোপ করা হয়নি। তদুপরি আমি প্রথম অধ্যায়ে মিরকাত ও শামীর ইবারত উদ্ধৃত করে দেখিয়েছি যে গ্রন্থকারদ্বয় উন্নতমানের খাদ্য-পরিবেশন, ভাল কাপড় পরিধান করা বিদ্আতে জায়েয হিসেবে গণ্য করেছেন। অথচ এসব দুনিয়াবি কাজ। কিন্তু এগুলোকে বিদ্আত হিসেবে গণ্য করেছেন। সুতরাং ওই ধরনের শর্তারোপ করাটা ভুল। যদিও এটা মেনেও নেয়া হয় যে বিদ্আতের ক্ষেত্রে দ্বীনি কাজের শর্ত আছে, তাতেও কিছু আসে যায় না। দ্বীনি কাজতো ওগুলোকে বলা হয়, যার জন্য ছওয়াব পাওয়া যায়। মুস্তাহাব, নফল, ওয়াজিব ও ফরয কাজ সমূহ সবই ধর্মীয় কাজ। এগুলো মানুষ ছওয়াবের উদ্দেশ্যে করে থাকে। দুনিয়াবী কোন কাজ সৎ উদ্দেশ্যে করা হলে, এর ছওয়াব পাওয়া যায়। হাদীছ শরীফে আছে-মুসলমানের সাথে প্রফুল মন নিয়ে সাক্ষাৎ করলেও সাদাকার ছওয়াব পাওয়া যায়। যেমন
❏ সা‘দ বিন আবি ওয়াক্কাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-
حَتَّى اللُّقْمَةَ تَرْفَعُهَا إِلَى فِي امْرَأَتِكَ
-‘‘এমনকি স্ত্রীর মুখে যে গ্লাসটি তুলে দেওয়া হয়, তাতেও ছওয়াব রয়েছে।’’
➥〈 ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ২/৯২৪পৃ: হা/৩০৭১, ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৭/৬২পৃ: হা/৫৩৫৪, ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ৩/৫০১পৃ: হা/২১১৬, ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ১১/১৬২পৃ:, সুনানে আবি দাউদ, হা/২৮৬৪ 〉
এখন বলুন, সৎ নিয়তে পোলাও খাওয়াটা বিদ্আত কেন? আর দ্বীনি কাজের শর্তারোপ করাতে আপনাদের কোন লাভ নেই। কেননা, দেওবন্দ মাদ্রাসা, ওখানকার সিলেবাস, দাওরায়ে হাদীচ, বেতন নিয়ে মাদ্রাসাতে পড়ানো, পরীক্ষা, ছুটি, কুরআন শরীফের হরকত দেয়া, কুরআন ও বুখারী শরীফের খতম পড়া, যেমন- দেওবন্দ মাদ্রাসায় পনের টাকা নিয়ে পড়া, সমস্ত হাদীছের বিষয় সমূহ, হাদীছ সমূহকে কিতাবের আকারে সংগৃহীত করা, কুরআন শরীফকে কাগজে সংরক্ষণ করা, এতে রূকু স্থাপন করা, ত্রিশ পারায় বিভক্ত করা ইত্যাদি সবই ধর্মীয় কাজ এবং বিদ্আত। কেননা হুযুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের যুগে এসব কাজের কোনটাউ হয়নি। বলুন, এগুলো হারাম, না হালাল? তাহলে মাহফিলে মীলাদ শরীফ ফাতিহা শরীফ কি অপরাধ করলো, যা হুযুর আলাইহিস সালামের যুগে প্রচলিত না থাকার দরুন হারাম সাব্যস্ত হলো আর উপরোক্ত সব কাজ হালাল গণ্য হলো?
আমি মৌলবী ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর সাথে মুনাজিরা করার সময় বলেছিলাম আপনারা চারটি বিষয়ের অর্থাৎ বিদ্আত, শিরক, দ্বীন ও ইবাদতের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করুন, যাতে কোন আপত্তি না থাকে এবং ব্যাখ্যাটা যেন পরিপূর্ণ হয়। এরপর আমার থেকে যা খুশি পুরষ্কার নিন। আল্লাহর উপর ভরসা করে বলতে পারি, দুনিয়ার কোন দেওবন্দী, লা-মাযহাবী এবং শিরক ও বিদ্আত নিয়ে সারাক্ষণ বকবককারী ওই চারটি বিষয়ের বর্ণনা এমনভাবে কখনও করতে পারবে না, যাতে তাদের মাযহাবের উপর কোন আঁচ না লাগে। এখনও প্রত্যেক দেওবন্দী ও লা-মাযহাবীর কাছে সাধারণ ঘোষণা দেয়া আছে যে ওসবের এমন সঠিক বর্ণনা দিক, যাতে মাহফিলে মীলাদ হারাম আর রেসালায়ে কাসেম ও পরিচয়ে আহলে হাদীস হালাল প্রতিভাত হয়; আল্লাহর ওলীদের থেকে সাহায্য প্রার্থনা শিরক আর পুলিশ ও অন্যান্যদের থেকে সাহায্য চাওয়া ইসলাম সম্মত বোঝা যায়। ইন্শা-আল্লাহ এসবের ব্যাখ্যা দিতে পারেনি এবং পারবেও না। তাদের উচিৎ, এ ভিত্তিহীন মাযহাব থেকে তওবা করে যেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অর্ন্তভুক্ত হয়ে যায়। আল্লাহ তাওফীক দিক! তারা যে হাদীছটি পেশ করে সেটা প্রসঙ্গে আমি উলেখ করেছি যে, مَا শব্দ দ্বারা আকাইদ বোঝানো হয়েছে; কেননা ধর্ম হচ্ছে আকীদার উপর নির্ভশীল । যদি আমল বোঝানো হয়, তাহলে لَيْسَ مِنْهُ ব্যাখ্যাংশ দ্বারা ওসব আমল বোঝানো হয়েছে, যা সুন্নাত বা ধর্মের বিপরীত নয়। আমি এর রেফারেন্সও ইতোপূর্বে প্রদান করেছি।
‘প্রত্যেক বিদ্আত হারাম। বিদ্আতে হাসনা বলতে কিছু নেই’- এ রকম বলাটা প্রথম অধ্যায়ে উলেখিত ওই হাদীছের বিপরীত, যেটাতে সুষ্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে যে, যিনি ইসলামের ভাল কাজের সূচনা করবেন, তিনি ছওয়াবের ভাগী হবেন; যে মন্দ কাজের প্রচলন করবেন, তিনি আযাবের ভাগী হবে। অধিকন্তু উক্ত অধ্যায়ে ফাত্ওয়ায়ে শামী, আশআতুল লুমআত ও মিরকাতের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে যে, বিদ্আত পাঁচ প্রকার- জায়েয, ওয়াজিব, মুস্তাহাব, মাকরূহ ও হারাম। যদি মেনেও নেয়া হয় যে সে প্রকার বিদ্আত হারাম, তাহলে মাদ্রাসা ইত্যাদিকে ধ্বংস করে দিন। কেননা তাও হারাম। তাছাড়া ফিক্হের মাসায়েল; সুফিয়ানে কিরামের যিকর-আযকার, যা কুরূনে ছালাছার পরে আবিষ্কৃত হয়েছে, সবই হারাম সাব্যস্ত হবে। শরীয়তের চারটি সিলসিলা- হানাফী, শাফেঈ, মালেকী ও হাম্বলী অনুরূপ তরীকতের চারটি সিলসিলা- কাদেরী, চিশ্তী, নকশবন্দী ও সরওয়ার্দী এ সব হুযুর আলাহিস সালামের বরং সাহাবায়ে কিরামের পরে আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু সকলেই এহুলোকে দ্বীনের কাজ মনে করে থাকেন। ছয় কালেমা, ঈমানে মুজমাল ও ঈমানে মুফাস্সাল, কুরআনের ত্রিশ পারা, হাদীছের প্রকারভেদ এবং আহ্কাম অর্থাৎ সহীহ জঈফ, হাসন বা মুফাসসিল ইত্যাদি, আরবী মাদ্রাসার নেসাব, দস্তারবন্দীর সভা, সনদ বিতরণ, পাগড়ী পরানো ইত্যাদি বিষয়ের সম্পর্কে কুরআন হাদীছে কোন নাম নিশানা নেই। কোন দেওবন্দী ওহাবী ওসব বিষয়ের একটি নামও কোন হাদীছে দেখাতে পারবে না। আবার হাদীছের সনদ এবং রেওয়ায়েত কারীদের ব্যাপারে সাক্ষ্য গ্রহণ কুরূনে ছালাছা থেকে প্রমাণিত নয়। মোট কথা শরীয়ত ও তরীকতের এমন কোন আমল নেই, যেখানে বিদ্আতের ছোয়াঁছ লাগেনি।
❏ মৌলবী ইসমাইল ছাহেব তাঁর ‘সিরাতুল মুস্তাকিম’ এর ৭ পৃষ্টায় বলেছেন-
نيز اكابر طريق نے اگرچه اذكار ومراقبات ورياضت ومجاهدات كى تعييں ميں جو راه ولايت كى مبادى هيں كوشش كى هے ليكن بحكم هر سخن وقتى وهرنكته مقامى داود- هرهر وقتكے مناسب اشغال اور هرهر قرن كے مطابق حال رياضت جدا جدا هيں
-‘‘তরীকতের শাইখগণ যদিওবা যিকর-আযকার, মুরাকাবাত, রিয়াজাত ও মুজাদেদাতের ক্ষেত্রে যে পথটি বেলাদত প্রাপ্তির সহায়ক, চেষ্টা করেছেন কিন্তু প্রত্যেক সময় অনুযায়ী আশগাল এবং প্রত্যেক যুগ অনুযায়ী রিয়াজাতের অবস্থা ভিন্ন ভিন্ন।’’
এ ইবারত থেকে বোঝা গেল যে তাসাঊফের যিকর-আযকার সমূহ সুফিয়ানে কিরামের আবিষ্কৃত এবং যুগে যুগে নতুন নতুন আবিষ্কার হচ্ছে এবং এটি বৈধ। বরং সুলুকের পথ পথ তাঁদের দ্বারাই লাভ করা হয়। বলুন এখন আপনাদের সেই দাবী অর্থাৎ প্রত্যেক নতুন কাজ হারাম, কোথায় রইলো? মানতেই হবে যে, যে কাজ সুন্নাতের বিপরীত তা মন্দ, বাকী সব পছন্দনীয় ও ভাল।
আপত্তি নং-(২) বিরুদ্ধাবাদীগণ এটাও বলে থাকেন যে, যে কাজ হুযুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম বা সাহাবায়ে কিরাম বা তাবেঈন বা তাবে তাবেঈনের আবিস্কৃত হয়ে থাকে, তা বিদ্আত। এ যুগ সমূহের পর যা আবিষ্কার হবে সেটা বিদ্আত এবং এগুলোর কোনটাই জায়েয নয়, সবই হারাম। সুতরাং, প্রতীয়মান হলো যে সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন বা তাবে তাবেঈনের আবিস্কৃত কাজসমূহ সুন্নাত হিসাবে গণ্য।
❏ এ জন্য মিশকাত শরীফের কিতাবুল ই‘কিসাম অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-
فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ، وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ
-‘‘তোমাদের কর্তব্য আমার সুন্নাত ও হিদায়েত প্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাতকে দাঁত দ্বারা শক্ত করে ধরে থাকা।’’ ৩৪
➥〈 আহমদ, আল-মুসনাদ, ৪/১২৬পৃ: হাদিস : ১৭২৭৫-৭৬, আবু দাউদ, আস্-সুনান: ৫/১৩পৃ: হাদিস, ৪৬০৭, তিরমিযী, আস্-সনান, ৫/৪৩পৃ: হাদিস : ২৬৭৬, ইবনে হিব্বান, আস্-সহিহ, ১/১৭৮পৃ: হাদিস : ৫, দারেমী, আস্-সুনান, ১/৫৭ পৃ, হাদিস- ৯৫, খতিব তিবরিযী, মিশকাত, কিতাবুল ইতিসাম, ১/৪৫ পৃ, হাদিস- ১৬৫, বায়হাকী, আস্-সুনানুল কোবরা, ১০/১১৪ পৃ, ও শুয়াবুল ঈমান, ৬/৬৭ পৃ, হাদিস- ৭৫১৫-৭৫১৫, বগভী, শরহে সুন্নাহ, ১/১৮১ পৃ, হাদিস- ১০২. 〉
উক্ত হাদীছ খুলাফায়ে রাশিদীনের কাজসমূহকে সুন্নাত বলা হয়েছে এবং এসবের এসবের অনুসরণ করার জন্য জোর দেয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায় যে তাঁদের আবিষ্কৃত কাজ সমূহ বিদ্আত নয়। ৩৫
➥〈 টিকাঃঅন্য আরেক বর্ণনায় হযরত হুযায়ফা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-
اقْتَدُوا بِاللَّذَيْنِ مِنْ بَعْدِي أَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ. -‘‘আমার পরে তোমরা আবু বকর এবং উমর (رضي الله عنه) কে অনুসরণ করবে।’’ (সুনানে তিরমিযি, ৬/৫০ পৃ, হাদিস:৩৬৬২ এবং হাদিস:৩৮০৫, সুনানে ইবনে মাযাহ, হাদিস : ৯৭,মুসনাদে আহমদ, হাদিস:২৩৩০৫, বায়হাকী, আস্-সুনানুল কোবরা, ৫/১২ পৃ, এবং ৮/১৫৩ পৃঃ হাকেম নিশাপুরী, আল্-মুস্তাদরাক, ৩/৭৫পৃঃ ) 〉
❏ মিশকাত শরীফ ফাযায়েলুস সাহাবা শীর্ষক অধ্যায়ে আছে-
وَعَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: خَيْرُ أُمَّتِي قَرْنِي ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ إِنَّ بَعْدَهُمْ قَوْمًا يَشْهَدُونَ وَلَا يُسْتَشْهَدُونَ وَيَخُونُونَ وَلَا يُؤْتَمَنُونَ
-‘‘আমার উম্মতের মধ্যে শ্রেষ্ট জামাত হচ্ছে আমার যুগের, অতঃপর যাঁরা ওদের সাথে সংশ্লিষ্ঠ, এর পর যারা ওদের সাথে সংশ্লিষ্ঠ। অতঃপর এমন একটি গোত্রের আর্বিভাব হবে, যারা সাক্ষী হিসেবে মনোনীত না হয়েও সাক্ষ্য দিবে, বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং তারা বিশ্বস্ত হবে না।’’ ৩৬
➥〈 ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৫/২পৃ: হা/৩৬৫০, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ৩/১৬৯৫পৃ:হা/৬০১০ 〉
এতে বোঝা গেল যে ভাল যুগ হচ্ছে তিনটি- সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈনের যুগ। এর পর মন্দ যুগ, তাই ভাল যুগে যা আবিষ্কৃত হবে, তা ভাল অর্থাৎ সুন্নাত এবং মন্দ যুগে যা আবিষ্কার হবে, তা মন্দ অর্থাৎ বিদ্আত।
❏ মিশকাত শরীফের কিতাবুল ই‘তিসাম অধ্যায়ে আরও উলেখিত আছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: .....تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً كُلُّهُمْ فِي النَّارِ إِلَّا مِلَّةً وَاحِدَةً قَالُوا وَمن هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ مَا أَنَا عَلَيْهِ وأصحابي . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
-‘‘বণী ইসরাঈলগণ ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল আর আমার উম্মত তিয়াত্তর র্ফিকায় বিভক্ত হবে এবং এক র্ফিকা ব্যতীত বাকী সব জাহান্নামী হবে। আরয করা হলো-ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)। সেই র্ফিকা কোনটি? ইরশাদ ফরমালেনঃ যার উপর আমি ও আমার সাহাবা রয়েছেন)। ইমাম তিরমিযি (رحمة الله) হাদিসটি সংকলন করেন।’’ ৩৭
➥〈 খতিব তিবরিযি, মিশকাতুল মাসাবিহ, ১/৬১পৃ: কিতাবুল ই‘তিসাম বিস্-সুন্নাহ, হাদিস নং-১৬১, তিরমিযি, আস্-সুনান, ৫/২৬পৃ: হাদিস, ২৬৪১, আহলে হাদিস আলবানী সুনানে তিরমিযির তাহক্বীকে হাদিসটি ‘হাসান’ বলেছেন, তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ১৩/৩০পৃ: হাদিস, ৬২, ১৪/৫২পৃ: হাদিস, ১৪৬৪৬, মাকতুবাতু ইবনে তাইমিয়া, কাহেরা, মিশর, প্রকাশ-১৪১৫হিঃ বায়হাকি, ই‘তিক্বাদ, ১/২৩৩পৃ: বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১/২১৩পৃ: হাদিস, ১০৪ 〉
অতএব বোঝা গেল, সাহাবায়ে কিরামের অনুসরণ হচ্ছে বেহেশতের পথ। এজন্য তাঁদের আবিষ্কৃত বিষয়সমূহকে বিদ্আত বলা যায় না।
❏ মিশকাত শরীফে বাবে ‘মানাক্বিবে সাহাবা’ অধ্যায়ে রয়েছে,
عن عمر بن الْخطاب قَالَ: وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:أَصْحَابِي كَالنُّجُومِ فَبِأَيِّهِمُ اقْتَدَيْتُمْ اهْتَدَيْتُمْ . رَوَاهُ رزين
-‘‘হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, আমার সাহাবারা হল তারকা সদৃশ। অতএব তোমরা তাদের যে কোন এক জনের হলেও অনুসরণ করবে, তাহলে হেদায়াত লাভ করবে।’’ ৩৮
➥〈 ইমাম আবু রাজীন : তাজরীদ ফিল বাইনাস সিহহাহ : ১/২৮০ পৃ:, খতিব তিবরিযী : মিশকাতুল মাসাবীহ : কিতাবুল মানাকিব : হাদিস : ৬০১৮ এ হাদিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমার লিখিত ‘‘প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’’ এর ১ম খন্ডের ২৩৪-২৪১ পৃষ্ঠা দেখুন। 〉
এর থেকেও প্রমাণিত হয়, সাহাবায়ে কিরামের অনুসরণ নাজাতের সোপান। সুতরাং, সাহাবীদের আবিষ্কৃত বিষয়সমূহ বিদ্আত নয় কেননা বিদ্আত তো হচ্ছে পথভ্রষ্টকারী।
উত্তরঃ এ ধরনের প্রশ্ন কেবল ধোঁকা মাত্র। আমি ধর্মীয় মিশকাত শরীফের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘মিরকাত’ ও ‘আশআতুল লুমআত’ এর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছি যে বিদ্আত হচ্ছে- যে কাজ হুযুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের পরে চালু হয়েছে। ওখানে সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেঈনের কোন উলেখ নেই।
❏ অধিকন্তু মিশকাত শরীফের بَابُ قِيَامِ شَهْرِ رَمَضَانَ শীর্ষক অধ্যায়ে আছে হযরত উমর (رضي الله عنه) স্বীয় খিলাফতের যুগে নিয়মিতভাবে জামাত অনুষ্ঠিত হতে দেখে বলেছেন- نِعْمَتِ الْبِدْعَةُ هَذِهِ -‘‘এতো বড়ই ভাল বিদ্আত।’’ ৩৯
➥〈 ➥〈 ইমাম মালেক, আল-মুয়াত্তা, ১/১১৪পৃ: কিয়ামু রামাযান, হা/২৫০, সহীহ বুখারী, ২/৭০৭পৃ: হা/১৯০৬, সহীহ ইবনে খুজায়মা, ২/১৫৫পৃ: হা/১৫৫, মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, ৪/২৫৮পৃ: হা/৭৭২৩ 〉
দেখুন, হযরত উমর (رضي الله عنه) নিজেই নিজের প্রচলিত কাজকে বিদ্আতে হাসানা বলেছেন। ইমাম তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, নাসায়ী এবং মিশকাত শরীফে কুনুত শীর্ষক অধ্যায়ে হযরত আবু মালেক আশজায়ী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন-আমার পিতাকে ফজর নামাযে কুনুতে নাযালা পড়া প্রসংগে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি ফরমান, হে বৎস, এ হচ্ছে বিদ্আত। দেখুন, সাহাবায়ে কিরামের যুগের কাজকে বিদ্আতে সাইয়া বলেছেন। যদি সাহাবায়ে কিরামের আবিষ্কৃত বিষয়সমূহ বিদ্আত না হতো, তাহলে তারাবীর জামাতকে কেন বিদ্আতে সাইয়া আখ্যায়িত করা হলো? ও সময়তো বিদ্আতের কাল ছিল না? তৃতীয়তঃ প্রথম অধ্যায়ে মিরকাতের বরাত দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে যে তারাবীর জামাত হচ্ছে বিদ্আতে হাসনা। তাঁরা হযরত উমর ফারুকের (رضي الله عنه) কাজকে বিদ্আতের অর্ন্তভুক্ত করেছেন। চতুর্থতঃ বুখারী শরীফের দ্বিতীয় খন্ড ফাযায়েলুল কোরআন শীর্ষক অধ্যায়ে আছে- হযরত সিদ্দীক (رضي الله عنه) হযরত যায়েদ ইবন ছাবেত (رضي الله عنه) কে যখন কুরআনে পাক একত্রিত করার হুকুম দিলেন, তখন তিনি আরয করলেন-
كَيْفَ تَفْعَلُونَ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟، قَالَ: هُوَ وَاللَّهِ خَيْرٌ
-‘‘আপনি এ কাজ কেন করতে যাচ্ছেন, যা হুযুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম করেননি। হযরত সিদ্দীক (رضي الله عنه) ফরমালেন, এ তো ভালো কাজ।’’৪০
➥〈 ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৪/১৭২০পৃ: হা/৪৪০২, সুনানে তিরমিযি, হা/৩১০১, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/৬৮০পৃ: হা/২২২০, ইমাম নাসাঈ, আস-সুনানিল কোবরা, ৫/৭পৃ: হা/২২০২ 〉
অর্থাৎ হযরত যায়েদ ইবন ছাবেত হযরত সিদ্দীক (رضي الله عنه) এর সমীপে আরয করলেন, কুরআন একত্রিকরণ হচ্ছে বিদ্আত। তাই আপনি কেন বিদ্আতে হাত দিচ্ছেন। তখন হযরত সিদ্দীক (رضي الله عنه) ইরশাদ ফরমালেন-বিদ্আত হচ্ছে বটে তবে উত্তম বিদ্আত।এর থেকে প্রমাণিত হলো- সাহাবায়ে কিরামের কাজ হচ্ছে বিদ্আত হাসানা। বিরুদ্ধাবাদীদের দলীলসমূহের জবাব নিম্নে প্রদত্ত হলোঃ
فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ
এ হাদীছ খুলাফায়ে রাশেদীনের উক্তি ও কাজসমূহকে শাব্দিক অর্থে সুন্নাত বলা হয়েছে। অর্থাৎ হে মুসলমানগণ, আপনারা আমার ও আমার খুলাফায়ে রাশেদীনের পথসমূহ অনুসরণ করুন। যেমন আমি প্রথম অধ্যায়ে একটি হাদীস উদ্ধৃতি করেছি-
مَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أَجْرُهَا... وَمَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً سَيِّئَةً
এ হাদীছে সুন্নাত অর্থ তরীকা বা পথ। কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান-
سُنَّةَ مَنْ قَدْ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنْ رُسُلِنَا وَلَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِيلًا
-‘‘......(সূরা বানী ইসরাঈল, আয়াত, ৭৭) আরও ইরশাদ ফরমান-
سُنَّةَ اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ
-‘‘....(সূরা ফাতহ, আয়াত, ২৩) এ আয়াত ও হাদীছে উলেখিত সুন্নাতদ্বারা শরয়ী সুন্নাত বুঝানো হয়েছে এবং এটি বিদ্আতের মুকাবিলায় নয় বরং এখানে তরীকা বা পন্থা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সুন্নাতে ইলাহীয়া হচ্ছে আল্লাহর তরীকা, সুন্নাতে আম্বিয়অ হচ্ছে নবীদের তরীকা এবং অন্যান্য।
❏ فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي এ হাদীসের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত ‘আশ্আতুল লুমআত’ গ্রন্থে উলেখিত আছে-
وبحقيقت سنت خلفائے راشدين هماں پيغمبر است كه در زماں آنحضرت عليه السلام شهرت نيافته بود ودر زماں ايشاں مشهور ومضاف به ايشاں شده-
-“খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত বলতে আসলে সুন্নাতে নববী, যা হুযুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের সময় প্রকাশ পায়নি; তাঁদের যুগেই প্রকাশ পেয়েছে এবং তাদেঁর বলেই আখ্যায়িত করা হয়েছে।’’ এর থেকে প্রতীয়মান হলো যে সুন্নাতে খুলাফা আসলে সুন্নাতে রসূলুল্লাহ কেই বলা হয়, কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে প্রচলনকারী হচ্ছেন খুলাফায়ে রাশেদীন। পঞ্চমতঃ মুহাদ্দিছীন ও ফকীহগণ বলেন-খুলাফায়ে রাশেদীনের নির্দেশ সুন্নাতের সাথে সংশ্লিষ্ঠ অর্থাৎ সুন্নাতের সাথে সংযোজন করা হয়েছে। যদি তাঁদের আবিষ্কৃত কাজ সুন্নাত সাব্যস্ত হতো, তাহলে সংযোজনের কিইবা অর্থ হতে পারে?
❏ ‘নুরুল আনোয়ার’ গ্রন্থের শুরুতে আছে-
وَقَوْلُ الصَّحَابِى فِيْمَا يُعْقَلُ مُلْحَقُ بِالْقِيَاسِ وَفِيْمَا لَايُعْقَلُ فَمَلْحَقُ بِالسُنَّةِ
-‘‘সাহাবায়ে কিরামের যেসব বাণী যুক্তি নির্ভর, তা কিয়াসের সাথে সম্পৃক্ত আর যে সব বাণী যুক্তির উর্দ্ধে, তা সুন্নাতের সাথে সম্পৃক্ত।’’ যদি সাহাবায়ে কিরামের সমস্ত উক্তি ও কর্ম সুন্নাত বলে গণ্য হতো, তাহলে কিয়াস ও সুন্নাতের সাথে সম্পৃক্তের কি অর্থ হতে পারে?
❏ ‘আশ্আতুল লুমআত’ فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي এর প্রেক্ষাপটে উলেখিত আছে-
پس هرچه خلفائے راشدين بداں حكم كرده باشند. اگرچه باجتهاد وقياس ايشاں بود موافق سنت نبوى است اطلاق بدعت برآں نتوا كرد.
‘‘-যে বিষয়ে খুলাফায়ে রাশেদীন রায় দিয়েছেন, তা যদি নিজস্ব কিয়াস ও ইজতিহাদ দ্বারা হয় এবং সুন্নাতে নববী অনুযায়ী হয়, তবে তাকে বিদ্আত বলা সমীচিন নয়।’’ এ ভাষ্য থেকে একেবারে সুষ্পষ্টরূপে প্রতিভাত হলো যে, খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত শাব্দিক অর্থে বলা হয়েছে এবং শরয়ী সুন্নাতের সাথে সংশ্লিষ্ঠ। একে সম্মান স্বরূপ বিদ্আত বলা যাবে না। কেননা বিদ্আত বলতে প্রায় সময় বিদ্আতে সাইয়াকে বোঝানো হয়।
(২) خَيْرُ أُمَّتِي قَرْنِي এ হাদীছ থেকে এটাইতো বোঝা গেল যে এ তিন যুগ (কুরূনে ছালাছা) পর্যন্ত ভাল কাজ বেশি হবে এবং এদের পর কম মন্দ বেশি হবে। কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে এ তিন যুগে যে কোন কাজ আবিষ্কৃত হোক কিংবা যে কেউ আবিষ্কার করুক, তা-ই সুন্নাত হিসেবে গণ্য হবে। এ হাদীছে সুন্নাত হওয়ার উলেখ কোথায় আছে? তাহলে জবরিয়া মাযহাব এবং কদরিয়া মাযহাব তাবেঈনের যামানায় আর্বিভূত হয়েছিল এবং ইমাম হুসাইন (رضي الله عنه) এর শাহাদাত ও হাজ্জাজের জুলুম ওই যুগেই সংঘটিত হয়েছিল্ তাহলে কি (মায়াজাল্লা) এগুলোকে সুন্নাত বলা হবে?
(৩-৪) مَا أَنَا عَلَيْهِ وأصحابي (যার উপর আমি এবং আমার সাহাবা) এবং أَصْحَابِي كَالنُّجُومِ -‘‘আমার সাহাবাগণ উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত।’’ এ হাদীছদ্বয় দ্বারা প্রমাণিত হয় যে সাহাবায়ে কিরামের অনুসরণ হচ্ছে হিদায়ত প্রাপ্তির সহায়ক এবং বিরোধিতা হরা হচ্ছে গুমরাহীর নামান্তর। এটি নিঃসন্দেহে সঠিক এবং এর উপর প্রত্যেক মুসলমনের আস্থা রয়েছে কিন্তু একথা কোথা থেকে বুঝা গেল যে তাঁদের প্রত্যেক কাজই শরয়ী সুন্নাতের অর্ন্তভুক্ত? অনেক সময় বিদ্আতে হাসনার অনুসরণও ওয়াজিব হয়ে পড়ে। যেমন
❏ মিশকাত শরীফের কিতাবুল ই‘তিসাম অধ্যায়ে উলেখিত আছে-
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اتَّبِعُوا السَّوَادَ الْأَعْظَمَ فَإِنَّهُ مَنْ شَذَّ شَذَّ فِي النَّارِ . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ من حَدِيث أنس.
-‘‘বড় জামাতের অনুসরণ করুন। যে এর থেকে পৃথক রইল, সে দোযখে পৃথক অবস্থায় থাকবে।’’ ৪১
➥〈 খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/৬১পৃ: হা/১৭৩, সুনানে ইবনে মাযাহ, ২/১৩০৩পৃ: হা/৩৯৫০ 〉
❏ আরও উলেখিত আছে-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: مَا رَآهُ الْمُؤْمِنُونَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّهِ حَسَنٌ
-‘‘হযরত ইবনে মাস্উদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, যে কাজকে মুসলমানগণ ভাল মনে করে, তা আল্লাহ তা’আলার নিকটেও ভাল হিসেবে গণ্য।’’ ৪২
➥〈 ইমাম আবু দাউদ তায়লসী : আল-মুসনাদ : ১/১৩০ হাদিস : ২৪৬, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল : আল মুসনাদ : ১/৩৭৯ : হাদিস : ৩৬০০ এবং ১৭০২, ইমাম আবু নুঈম ইস্পাহানী : হুলিয়াতুল আউলিয়া : ১/৩৭৫পৃ:ইমাম তাবরানী, মুজামুল আওসাত, ৪/৫৮পৃ: হাদিস, ৩৬০২ দারুল হারামাঈন, কাহেরা, মিশর, আল্লামা ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউদ যাওয়াইদ : ১/১৭৭-১৭৮ পৃ: দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত,লেবানন, আল্লামা ইবনে কাসীর : বেদায়া ওয়ান নিহায়া : ১০/৩২৭ : হাদিস:৪০২, আল্লামা আযলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৪৫ পৃ: : হাদিস : ২২১৪, ইমাম বায্যার : আল মুসনাদ : ৫/২১২ পৃ: : হাদিস : ১৮১৬, ইমাম বায়হাকী : আল-ই‘তিক্বাদ : ১/৩২২ পৃ:,আল্লামা খতিব বাগদাদী : তারীখে বাগদাদ : /৪৪৬ পৃ:,ইমাম বগভী : শরহে সুন্নাহ : ১/১০৫ পৃ:,ইমাম আহমদ : মুসনাদ : ১/৩৬৭ পৃ: : হাদিস : ৫৪১, আল্লামা হাকেম নিশাপুরী : আল-মুস্তাদরাক : ৩/৮৩পৃ:হাদিস: ৪৪৬৫,তিনি বলেন হাদিসের সনদটি সহিহ,আর তাঁর সাথে যাহাবী একমত পোষন করেছেন,ইমাম তাবরানী : মু‘জামুল কবীর :৭/১১২-১১৫ হাদিস নং ৮৫৮২ ও ৮৫৯৩,ইমাম ইবনে রযব : জামিউল উলূম : ১/২৫৪পৃ: ইমাম সাখাভী : আল মাকাসিদুল হাসানা : ৪২২ পৃ: : হাদিস : ৯৫৭, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ,মওদ্বুআতুল কবীর : ৩২ পৃ: নূর মুহাম্মদ কারখানা, করাচি, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মিরকাত : ৩/২৫৪ পৃ:,ইমাম আহমদ,ফাদ্বায়েলুল সাহাবা,১/৩৬৭পৃ:হাদিস,৫৪১,আবূ সাঈদ ইবনে আরাবী (ওফাত.৩৪০হিঃ) মু‘জামে ইবনে আরাবী,২/৪৪৩পৃ:হাদিস,৮৬১,তিনি হাদিসটি উক্ত সাহাবির দুইজন ছাত্রের দ্বারা দু‘টি সূত্রে বর্ণনা করেছেন, যায়লাঈ, নাসবুর রায়্যাহ, ৪/১৩৩পৃ:তিনি হাকিম নিশাপুরীর রায়কে গ্রহন করেছেন,তিনি তার কিতাবের অন্যত্র বাবুল ইসতিহাসানেও বর্ণনা করেছেন, ইবনে কাসীর,তুহফাতুল তা¡লেব বি মা‘রিফাতু আহাদিস, ১/৩৯১পৃ: হাদিস/৩৩৪, তিনি বলেন,হাদিসটির সনদ শক্তিশালী। হায়সামী,গায়াতুল মাকসুদ ফি যাওয়াইদুল মুসনাদ, ১/১১১পৃ: হাদিস,২৪৬, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ,বয়রুত,লেবানন, ইবনে= হাজার আসকালানী, ইত্তেহাফুল মুহরাত,১০/১৯৬পৃ:হাদিস,১২৫৬৮, ইবনে হাজার, দিরায়া ফি তাখরীজে হেদায়া, অধ্যায়, কিতাবুল ইজারা, ২/১৮৭পৃ:হাদিস,৮৬৩, তিনি বলেন সনদটি ‘হাসান’, সুয়ূতি,আদ্দরুল মুনতাসিরা ফি আহাদিসুল মুসতাহিরাহ, ১/১৮৮পৃ: হাদিস,৪০১, জামিয়াতুল মুলকে সুউদ, রিয়াদ. সৌদি আরব, দরবেশ হুত, আস্-সুনানিল মুত্তালিব, ১/২৪৭পৃ: হাদিস, ১২৫৭, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ,বয়রুত, তিনি এ হাদিসটির ইবনে আব্বাস থেকে আরেকটি সূত্র আছে বলে উলেখ করেছেন। ছুহাইব আব্দুল জাব্বার, জামেউল সহিহ লিল সুনান ওয়াল মাসানিদ, ৩/১১২পৃ:ও ৩/৪৩৮পৃ:, দারেকুতনী, আল-ইলল, ৫/৬৬পৃ: হাদিস,৭১১, তিনি তাঁর এ গ্রন্থে উক্ত সাহাবির অনেক ছাত্রের সূত্রের দ¦ারা হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। তাহের পাটনী, তাযকিরাতুল মওদ্বুআত,১/৯১পৃ: তিনি বলেন সনদটি ‘হাসান’,মোল্লা আলী ক্বারী, আসরারুল মারফূআহ, ১/১০৬পৃ: হাদিস,৫৫, তিনি এ সাহাবি থেকে মারফূ ও মওকুফ উভয় সূত্রে বর্ণনা করেছেন। হাসকাফী, র্দুরুল মুখতার ওয়া হাশিয়ায়ে ইবনে আবেদীন, ২/২৩৭পৃ: মায়্যেতের দাফন অধ্যায়,ও ৪/৩৬৪পৃ: কিতাবুল ওয়াক্ফ অধ্যায়। 〉
❏ আরও উলেখিত আছে-
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَقَدْ خَلَعَ رِبْقَةَ الْإِسْلَامِ مِنْ عُنُقِهِ
-‘‘মুসলমানগণের জামাত থেকে যে কনিষ্ঠাঙ্গুলী পরিমাণও পৃথক রইল, সে যেন ইসলামের রশি নিজ গলা থেকে ফেলে দিল।’’ ৪৩
➥〈 খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/৬৫পৃ: হা/১৮৫, সুনানে আবি দাউদ, ৪/২৪১পৃ: হা/৪৭৫৮, আলবানী পর্যন্ত এটিকে সহীহ বলেছেন। 〉
❏ কুরআনে কীরমে আছে-
وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ
-‘‘যে মুসলমানের পথ থেকে ভিন্ন পথ চলে, আমি তাকে সে অবস্থায় ছেড়ে দেব এবং তাকে দোযখে প্রবেশ করাবো।’’
➥〈 সূরা নিসা, আয়াত, ১১৫ 〉
এ আয়াত ও হাদীস থেকে বোঝা গেল যে আকীদা ও আমলসমূহের ব্যাপারে মুসলমানদের বড় জামাতের অনুসরণ করা প্রত্যেকের জন্য প্রয়োজন; ওদের বিরোধিতা করা মানে দোযখের পথ পরিষ্কার করা। কিন্তু তা দিয়ে এ কথা প্রমাণিত হয় না যে মুসলিম জামাতের আবিষ্কৃত কোন কাজই বিদ্আত নয়, সবই সুন্নাত সাব্যস্ত হবে। তা কখনও হতে পারে না। বিদ্আতই হবে, তবে বিদ্আতে হাসানা। যেভাবে সাহাবায়ে কিরামের আবিষ্কৃত কাজকে সুন্নাতে সাহাবা বলা হয়, তদ্রুপ সলফে সালেহীনের আবিষ্কৃত কাজকে শাব্দিক অর্থে সুন্নাতে সালফ অর্থাৎ পছন্দনীয় ধর্মীয় তরীকা বলা হয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যারা প্রত্যেক বিদ্আত অর্থাৎ প্রত্যেক নতুন কাজকে হারাম মনে করে থাকেন, তারা এ মূলনীতির ব্যাপারে কি বলবেন-
أَنَّ الْأَصْلَ فِي الْأَشْيَاءِ الْإِبَاحَةُ
-‘‘সমস্ত বস্তু মূলতঃ মুবাহ।’’ ৪৫
➥〈 ফাতওয়ায়ে শামী, ১/১০৫পৃঃ 〉
অর্থাৎ প্রত্যেক বস্তু মূলতঃ মুবাহ এবং হালাল হবে। সুতরাং, নতুন হওয়ার জন্য নয় বরং নিষেধাজ্ঞা দ্বারা হারাম প্রমাণিত হবে। এ মূলনীতিটা কুরআনে পাক, সহীহ হাদীচ ও ফকীহগণের উক্তিসমূহ থেকে প্রমাণিত এবং মুকালিদের দাবীদার কোন ব্যক্তি এ মূলনীতি অস্বীকার করতে পারে না।
❏ কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ وَإِنْ تَسْأَلُوا عَنْهَا
-‘‘হে ঈমানদারগণ, এ রকম বিষয়সমূহ জিজ্ঞাসা করো না, যা তোমাদের কাছে প্রকাশ করা হলে খারাপ লাগবে এবং যদি কুরআন অবর্তীণ হওয়ার সময় ওসব বিষয়ে জিজ্ঞাসা কর, তাহলে প্রকাশ করে দেয়া হবে। আল্লাহ তাদেরকে মাফ করে দিয়েছেন।’’ ৪৬
➥〈 সূরা মায়েদা, ১০১ 〉
এ থেকে বোঝা গেল যেটা সম্পর্কে হালাল হারাম কিছুই বলা হলো না, সেটা ক্ষমার যোগ্য। এজন্য কুরআন শরীফ, যে সব মহিলাদের বিবাহ হারাম, ওদের বর্ণনার পর ইরশাদ ফরমান -
وَأُحِلَّ لَكُمْ مَا وَرَاءَ ذَلِكُمْ
-‘‘ওদের বাদ বাকী সমস্ত মহিলা তোমাদের জন্য হালাল।’’ ৪৭
➥〈 সূরা নিসা, ২৪ 〉
আরও ইরশাদ ফরমান -
وَقَدْ فَصَّلَ لَكُمْ مَا حَرَّمَ عَلَيْكُمْ
-‘‘তোমাদের কাছে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে ওসব বিষয়, যা তোমাদের জন্য হারাম) অর্থাৎ হালাল জিনিস সমূহের বিস্তারিত বিবরণের প্রয়োজন নেই, সব জিনসই হালাল তবে কিছু জিনিস নিষিদ্ধ রয়েছে, যার বিবরণ দেয়া হয়েছে।’’ ৪৮
➥〈 সূরা আনআম, ১১৯ 〉
এগুলো বাদ দিয়ে সবগুলো হালাল।
❏ মিশকাত শরীফ كتاب الْأَطْعِمَةএর আদাবুত ত্বআম দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে উলেখিত আছে-
وَعَنْ سَلْمَانَ قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ .... فَقَالَ: الْحَلَالُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ وَالْحَرَامُ مَا حَرَّمَ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ وَمَا سَكَتَ عَنْهُ فَهُوَ مِمَّا عَفَا عَنْهُ
-‘‘হালাল হচ্ছে, যা আল্লাহ তাআলা স্বীয় কিতাবে (কুরআন) হালাল করেছেন আর হারাম হচ্ছে, যা আল্লাহ তাআলা স্বীয় কিতাবে হারাম করেছেন। এবং যেটা সম্পর্কে নীরব রয়েছে, সেটা মাফ।’’ ৪৯
➥〈 খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ২/১২২০পৃঃ হা/৪২২৮, সুনানে তিরমিযি, ৩/২৭২পৃঃ হা/১৭২৬, সুনানে ইবনে মাযাহ, ২/১১১৭পৃঃ হা/৩৩৬৭, ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ৬/২৫০পৃঃ হা/৬১২৪ 〉
এ হাদীছ থেকে বোঝা গেল জিনিস তিন রকমের হয়ে থাকে। প্রথমতঃ ওই ধরনের জিনিস, যার হালাল হওয়া সম্পর্কে কুরআনে সুষ্পষ্ট উলেখ আছে। দ্বিতীয়তঃ সে ধরনের জিনিস, যার হারাম হওয়া সম্পর্কে সুষ্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে । তৃতীয়তঃ যে বিষয়ে কিছূ বলা হয়নি, তা মাফ।
❏ ফাত্ওয়ায়ে শামী প্রথম খন্ড কিতাবুত তাহারাত শীর্ষক আলোচনায় উলেখিক আছে-
الْمُخْتَارَ أَنَّ الْأَصْلَ الْإِبَاحَةُ عِنْدَ الْجُمْهُورِ مِنْ الْحَنَفِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ
-‘‘অধিকাংশ হানাফী ও শাফেঈদের এ মতামতই রয়েছে যে প্রত্যেক কিছূ মূলত মুবাহ (পাপ-পুণ্যহীন) হয়ে থাকে।’’ ৫০
➥〈 ফাতওয়ায়ে শামী, ১/১০৫পৃঃ 〉
তাফসীরে খাযেন, রূহুল বায়ান, খাযায়েনুল ইরফান ও অণ্যান্য তাফসীরেও একই রকম ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে অর্থাৎ প্রত্যেক কিছু মূলতঃ মুবাহ; নিষেধাজ্ঞা ফলে নাজায়েয হয়ে যায়।
এখন যারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কাছে জিজ্ঞাসা করে যে মীলাদ শরীফ উদ্যাপন করাটা কোথায় লিখা আছে? বা হুযুর আলাইহিস সালাম বা সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন বা তাবে তাবেঈন কখনও উদ্যাপন করেছিলেন কিনা? এটা নিছক ধোঁকা মাত্র। আহ্লে সুন্নাতের উচিত তাদের জিজ্ঞাসা করা-বলুন মীলাদ শরীফ করা যে হারাম, তা কোথায় লিখা আছে? যখন আল্লাহ হারাম করলো না; রাসূল আলাহিস সালাম নিষেধ করলেন না এবং কোন দলীল থেকেও নিষেধাজ্ঞা প্রমাণিত হলো না, তাহলে আপনারা কোন্ যুক্তিতে হারাম বলেছেন? মীলাদ শরীফ ইত্যাদির প্রমাণ না থাকাটা জায়েয হওয়াটাই লক্ষণ।
❏ আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান-
قُلْ لَا أَجِدُ فِي مَا أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَى طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُونَ مَيْتَةً
-‘‘বলুন, আমার প্রতি যে প্রত্যাদেশ হয়েছে, তাতে লোক যা আহার করে তার মধ্যে আমি কিছুই নিষিদ্ধ পাইনি, কেবল মরা .... ।’’ ৫১
➥〈 সূরা আন‘আম, ১৪৫ 〉
❏ আরও ইরশাদ ফরমান-
قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ اللَّهِ الَّتِي أَخْرَجَ لِعِبَادِهِ وَالطَّيِّبَاتِ مِنَ الرِّزْقِ
-‘‘বলূন, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের জন্য সে সব শোভার বস্তু ও বিশুদ্ধ জীবিকা সৃষ্টি করেছে, তা কে নিষিদ্ধ করেছেন? ৫২
➥〈 সূরা আ‘রাফ, ৩২ 〉
এসব আয়াত থেকে প্রমাণিত হলো যে, হারামের কোন প্রমাণ পাওয়া না গেলে হালালই প্রমাণিত হয়, হারাম প্রমাণিত হয় না। অথচ তারা এর থেকে হারাম প্রমাণিত করছেন। কি আর্শ্চয! এ একটা উল্টা যুক্তি। আচ্ছা বলুন দেখি, রেলগাড়ি যোগে ভ্রমণ, মাদ্রাসা প্রতিষ্টা করা কোথায় লিখা আছে? বা এটা যে হালাল বা কোন সাহাবা বা তাবেঈন যে করেছেন, এর কোন প্রমাণ আছে কি? অতএব এসব যেরূপ হালাল, তাও সেরুপ জায়েয এবং হালাল।
━━━━━━━━
No comments